গোপন মিনারে: বর্ষার ভাবনা
রুদ্র কিংশুক
গোপন মিনার: বর্ষার ভাবনা
রুদ্র কিংশুক
পর্ব ১
একেকটা গল্প আছে যার মাথামুণ্ডু নেই। এখন মাথামুণ্ডু কথাটারও কোনো মাথামুণ্ডু নেই। আসলে বলা উচিত মাথা-লেজুড় নেই, যেমন বানর। অথবা লেজা-মুড়ো নেই। যেমন মাছ। অথবা আরম্ভ- শেষ নেই। যেমন গল্প। আর যে গল্পের শেষ নেই তাকে কীভাবেই বা আরম্ভ করব! আর কীভাবেই বা শেষ করব ! আরও একটা কথা। গল্পের ভেতরে থাকে বীজ। এক বা একাধিক। কখনও পরিপক্ক শাঁসটাই আসল। শাঁসের দাঁড়াবার জায়গা নিশ্চিত করতে ওইফ বীজ, বীজ-সংহতি। আর কখনও কখনও বীজটাই আসল। বীজের দিকে পাখিদের, পোকামাকড়দের ডেকে আনার একটা ফিকির অই রঙিন, ছড়িয়ে-পড়া শাঁস। আমার এই গল্পটা যে কোন ধারার সেটা ঠিক করবে কে? অই যে নদীর পারে সেয়াকুলগাছে বসে আছে যে মাছরাঙাপাখি সে ঠিক করুক গল্পটা উড়ান দেবে নাকি সাঁতার দেবে খড়গেশ্বরী অথবা বাঁকা অথবা গুরজোয়ানি নদীর জলে। কোন নদী আজ ডেকে নেবে তাকে, বর্ষার জলস্রোতে অথবা ঘূর্ণির কুহকে?
আমার একটা আশ্চর্য কৌটা আছে। একটা আস্ত ফুলেল গন্ধরাজলেবুগাছ তার ভেতরে। রেখেছি তাকে গোপন মিনারে। মিনার বলতে আমার এই বুকপকেটে। তুমি ভাবছো এতে কৃতিত্বের কী আছে ! কিন্তু এমন আস্ত এক সুগন্ধি গাছকে বুকের মধ্যে হাপিস করে দেওয়া তো ঠিক বানজারা বা ম্যাজিশিয়ানদেরই কাজ। সুগন্ধ লুকিয়ে রাখা যে কত কঠিন সে কেবল কস্তুরীমৃগেরা জানে। কোনো দিন গভীর রাতে আমি ছাদে দাঁড়াই। সপ্তর্ষিমণ্ডলের নীচে। কৌটার ঢাকনা খুলে দিলেই ডানা ঝাপটিয়ে সে তোমার কাছে উড়ে যেতে চায়। তোমার নাম তার খুব জানা। সে জানে তুমি থাকো এক সবুজ সীমান্ত শহরে। সেখানে সূর্য ওঠে আগে। তোমার ডাক নামও বলে দিয়েছি তাকে, টিয়া। তুমি তাকে মাটি দিও, দৃষ্টি আর একটা বর্ষাকাল। ফুলেল গন্ধরাজ। সুগন্ধি লালাবি। শুধু তার গন্ধের ভেতর মিশিয়ে দিয়েছি একটু ভালোবাসার খাদ। তুমি তাকে গ্রহণ করবে তো?
উত্তরহীন এই বর্ষার রাত। তবু সংগীত মুখর। গোপন মিনারে ছড়িয়ে পড়ে কার নুপুর! আকাশ জুড়ে গর্জমান মেঘমালার ভেতরে স্পষ্ট দেখি তার ভেতরে স্পষ্ট দেখি তার স্পষ্ট দেখি তার মুখ । বহুযুগ আগে, আমার তৃণজন্মে পাহাড়ি পথে পথে একবার সে আমার বুকের ওপর মর্মর তুলে হেঁটে গিয়েছিল। লোকে তাকে বলে মীরা। আমি বলি বিরহী ঘুঙুর।
রুদ্র কিংশুক
গোপন মিনার: বর্ষার ভাবনা
রুদ্র কিংশুক
পর্ব ১
একেকটা গল্প আছে যার মাথামুণ্ডু নেই। এখন মাথামুণ্ডু কথাটারও কোনো মাথামুণ্ডু নেই। আসলে বলা উচিত মাথা-লেজুড় নেই, যেমন বানর। অথবা লেজা-মুড়ো নেই। যেমন মাছ। অথবা আরম্ভ- শেষ নেই। যেমন গল্প। আর যে গল্পের শেষ নেই তাকে কীভাবেই বা আরম্ভ করব! আর কীভাবেই বা শেষ করব ! আরও একটা কথা। গল্পের ভেতরে থাকে বীজ। এক বা একাধিক। কখনও পরিপক্ক শাঁসটাই আসল। শাঁসের দাঁড়াবার জায়গা নিশ্চিত করতে ওইফ বীজ, বীজ-সংহতি। আর কখনও কখনও বীজটাই আসল। বীজের দিকে পাখিদের, পোকামাকড়দের ডেকে আনার একটা ফিকির অই রঙিন, ছড়িয়ে-পড়া শাঁস। আমার এই গল্পটা যে কোন ধারার সেটা ঠিক করবে কে? অই যে নদীর পারে সেয়াকুলগাছে বসে আছে যে মাছরাঙাপাখি সে ঠিক করুক গল্পটা উড়ান দেবে নাকি সাঁতার দেবে খড়গেশ্বরী অথবা বাঁকা অথবা গুরজোয়ানি নদীর জলে। কোন নদী আজ ডেকে নেবে তাকে, বর্ষার জলস্রোতে অথবা ঘূর্ণির কুহকে?
আমার একটা আশ্চর্য কৌটা আছে। একটা আস্ত ফুলেল গন্ধরাজলেবুগাছ তার ভেতরে। রেখেছি তাকে গোপন মিনারে। মিনার বলতে আমার এই বুকপকেটে। তুমি ভাবছো এতে কৃতিত্বের কী আছে ! কিন্তু এমন আস্ত এক সুগন্ধি গাছকে বুকের মধ্যে হাপিস করে দেওয়া তো ঠিক বানজারা বা ম্যাজিশিয়ানদেরই কাজ। সুগন্ধ লুকিয়ে রাখা যে কত কঠিন সে কেবল কস্তুরীমৃগেরা জানে। কোনো দিন গভীর রাতে আমি ছাদে দাঁড়াই। সপ্তর্ষিমণ্ডলের নীচে। কৌটার ঢাকনা খুলে দিলেই ডানা ঝাপটিয়ে সে তোমার কাছে উড়ে যেতে চায়। তোমার নাম তার খুব জানা। সে জানে তুমি থাকো এক সবুজ সীমান্ত শহরে। সেখানে সূর্য ওঠে আগে। তোমার ডাক নামও বলে দিয়েছি তাকে, টিয়া। তুমি তাকে মাটি দিও, দৃষ্টি আর একটা বর্ষাকাল। ফুলেল গন্ধরাজ। সুগন্ধি লালাবি। শুধু তার গন্ধের ভেতর মিশিয়ে দিয়েছি একটু ভালোবাসার খাদ। তুমি তাকে গ্রহণ করবে তো?
উত্তরহীন এই বর্ষার রাত। তবু সংগীত মুখর। গোপন মিনারে ছড়িয়ে পড়ে কার নুপুর! আকাশ জুড়ে গর্জমান মেঘমালার ভেতরে স্পষ্ট দেখি তার ভেতরে স্পষ্ট দেখি তার স্পষ্ট দেখি তার মুখ । বহুযুগ আগে, আমার তৃণজন্মে পাহাড়ি পথে পথে একবার সে আমার বুকের ওপর মর্মর তুলে হেঁটে গিয়েছিল। লোকে তাকে বলে মীরা। আমি বলি বিরহী ঘুঙুর।
some words are repeated by mistake.
উত্তরমুছুন