শুক্রবার, ১২ জুন, ২০২০

সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য || প্রভাত চৌধুরী || ধারাবাহিক গদ্য

সৌমিত্র রায় - এর জন্য  গদ্য
প্রভাত চৌধুরী

৩৯.
আজ লিখতে হবে বহরমপুরের দু-জন মহাপুরুষ এবং কয়েকজন উত্তমপুরুষের কথা  ।
সেকারণে প্রথমেই
মহাপুরুষ এবং উত্তমপুরুষ শব্দদুটিকে ভালোভাবে চেনার জন্য ব্যবহার করছি আকাদেমি বিদ্যার্থী বাংলা অভিধান এবং সংসদ ব্যাকরণ অভিধান। দুটি শব্দের জন্য দুটি পৃথক পৃথক অভিধান ! তৃতীয় একটি শব্দ-এর জন্য তৃতীয় অভিধানের আশ্রয় গ্রহণ করতাম কিনা সে প্রশ্নের উত্তর না খুঁজে মুখোমুখি হই মহাপুরুষ -- এই শব্দটির কাছে।
মহাপুরুষ = মহান আধ্যাত্মিক পুরুষ। কর্মধারয়  সমাস। আর আধ্যাত্মিক এই বিশেষণটির অর্থ হল ঈশ্বর বা ধর্মবিশ্বাস বিষয়ক।
আর  ,  উত্তমপুরুষ : সর্বনামের একটি শ্রেণি। বক্তা স্বয়ং বা তাঁর সঙ্গে অন্য সবাই যাঁদের হয়ে তিনি বলছেন , হলেন উত্তমপুরুষ।
এবার মহাপুরুষদ্বয়ের সঙ্গে পরিচিত হওয়া যাক।
চাঁদু = শুভ চট্টোপাধ্যায়। রৌরব-সম্পাদক। এপ্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি রৌরব -এর প্রথম সংখ্যার সম্পাদক ছিল শান্তিময় মুখোপাধ্যায়।
চাঁদু-র সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় আমার শান্তিময় সূত্রে। তখন আমার নির্বাচন পর্ব। তবু বইমেলা থেকে নির্বাসিত থাকতে পারিনি। বইমেলায় যেতাম। সঙ্গী শান্তিময়। তখন মেলায় আমার একটা গলতা থাকতো। নেশা করার জন্য। সেই গলতায় চাঁদু-কে নিয়ে এসেছিল শান্তিময়।
পরে নাসের যে শুভ-কে চেনালো , দেখলাম এ তো আমার পূর্বপরিচিত চাঁদু। এই চাঁদু-র লেবেলের  পরহিতৈষী বন্ধু পাওয়াটা পরম গৌরবের।
একটা ঘটনা : তখন চাঁদু অর্থনৈতিকভাবে অনেকটা দুর্বল। আমরা ভাগীরথী ফেরত ওর বাড়ি গিয়েছিলাম। ওরা সেদিন গুগলি রান্না করেছিল। সম্ভবত দুপুরে ভাতের সঙ্গে খাওয়ার একমাত্র খাবার। আমি কী কুক্ষণে বলে ফেলেছিলাম --- গুগলি আমার প্রিয় খাবার।
ফেরার সময় পুরো গুগলি রান্নাটা আমাকে একটা টিফিনবাক্সে ভরে দিয়েছিল। আমি না করতে পারিনি। না করলে চাঁদু-র দারিদ্রতাকে অসম্মান করা হত।
এই চাঁদু বা শুভ চট্টোপাধ্যায়-কে যদি মহাপুরুষ আখ্যা না দিই তাহলে আমি সাজাপ্রাপ্ত হব।

দ্বিতীয় মহাপুরুষ পম্পু = পম্পু মজুমদার। এই পম্পু-কে আমি  ' নাশকতার দেবদূত ' আখ্যা দিলাম। নাসের-রা সকলে মিলে আমার সামনে পম্পু-র যে যাপনশৈলী উপস্থিত করেছে তা লিখতে বসলে একটা জীবনীমূলক উপন্যাস হয়ে যাবে।
বহরমপুরের তরুণ কবিদের কাছে পম্পু ছিল দেবদূত।
তার কবিতা এক অলৌকিকতার সন্ধান দিয়েছে ।
পম্পু ছিল বহরমপুরের নবনাট্যের নাট্যাচার্য।
আমাদের সান্ধ্যযাপনের সঙ্গী ছিল পম্পু। এজন্য আমি গর্ববোধ করি । সেসময় ওর আর্থিক অস্বচ্ছলতার কথা সকলেই জানতাম। তার মধ্যেও পম্পু আমার জন্য মাঝেমধ্যে বঙ্গীয় পানীয় নিয়ে আসতো , এবং লুকিয়ে লুকিয়ে দিয়ে যেত , অন্যদের জানতে না দিয়ে।
পম্পু-র লেখাগুলো সংগ্রহ করে একটা কবিতার বই বের করার পরিকল্পনা করেছিলাম। পারিনি। এই না পারার দায়টা পুরো আমার একার।
উত্তমপুরুষদের কথা আগামীকাল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...