সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
অন্নপূর্ণাকথা। শুরুতেই একটা দোমনা-ভাব ! কীভাবে বা কোন সূত্রে। সুতো-র সংখ্যা দুই। সম্ভবনা-র সংখ্যাও দুই।
প্রথম সম্ভাবনা ডাক্তারবাবু বা ভূমেন্দ্র গুহ। দ্বিতীয় সম্ভাবনা অজয় দাশগুপ্ত। সাম্প্রতিক- কবিপত্র - অমৃত - তিনসঙ্গী কোনো সূত্রেই অজয় দাশগুপ্ত-র সঙ্গে পরিচিত ছিলাম না। কবিতাপাক্ষিক-এর সময় ভূমেন্দ্র গুহ-র মারফত অজয়দার সঙ্গে যোগাযোগ এটা বেশ মনে আছে। কারণ অজয়দা আগে বিমল কর - এর সহযোগী ছিলেন বিভিন্ন কাজকর্মে। আর আমি ছিলাম বিমল কর - এর পাঠক মাত্র। ব্যক্তিগত পরিচয়ও ছিল না।
ভূমেন্দ্র গুহ-র সঙ্গে পৃর্ব পরিচয় ছিল না। শান্তিময় মুখোপাধ্যায় সূত্রে পেয়েছিলাম। সেকথা আগেই লিখেছি।
১৯৯৭-এ কবিতাপাক্ষিক প্রকাশনার বেশ অনেকগুলি বই প্রকাশিত হয়ে গেছে। কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ায় কোনো কাউন্টার নেই। দে বুক স্টোর কিংবা অন্য দোকানে অর্ডার থাকলে কালীঘাট থেকে ব্যাগে করে বই নিয়ে আসতে হত। বিপদ হত বাংলাদেশের অর্ডার এলে। নয়াউদ্যোগ- এ বই দেবার জন্য ট্যাক্সি করতে হত। আমাদের এই সমস্যার কথা আমাদের পরিচিত সকলেই জানতেন।
ঠিক এই পরিস্থিতিতে অজয়দা অথবা ভূমেনদা , দুজনের একজন পরিচিত করিয়ে দিয়েছিলেন বিজয় দাশ -এর সঙ্গে।বিজয় বুক স্টল বিশ্বাস বুক- এর লাগোয়া। রাস্তার বা ফুটপাতের ওপর একটা স্টল বা দোকান। বিজয়দা-কে একটা ঘর দেখে দিতে বলেছিলাম। উনি এককথায় বলেছিলেন --- আমাদের কলেজ রো-তে একটা ঘর আছে। ওই ঘরটা আপনারা ব্যবহার করুন। বিকেলে চাবি নিয়ে ঘর খুলবেন , রাত্রে চাবি ফেরত দিয়ে যাবেন। কোনো ভাড়াটাড়ার কথা মনেও আনবেন না।
ভাবতে পারেন এ রকম বড়ো মনের মানুষ সেই সময় কবিতাপাক্ষিকের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বলেই এগিয়ে যাবার কথা ভাবতে পরেছিলাম।
আজ অন্নপূর্ণা-য় ফোন করেছিলাম। বিজয়দার ভাই অজয় দাস বললেন অজয় দাশগুপ্ত সূত্রেই আমি অন্নপূর্ণায় পৌঁছেছিলাম। বিজয়দা দেশের বাড়িতে আছেন।উনি আসার পর সঠিক তথ্য জানা যাবে। তবে সূত্র যা-ই হোক না অন্নপূর্ণা-র কলেজ রো -র ঘরটা প্রতিদিন জমজমাট থাকত। যোগাযোগ আরো সহজ হয়ে গেল। আমরা বইবাজারে প্রবেশ করলাম।
কলেজ রো- তে আমার একটা অতীত ছিল। ' তিনসঙ্গী '- র অতীত। নিজের কায়িক পরিশ্রম দিয়ে বানিয়েছিলাম তিনসঙ্গী। শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়-এর প্রকল্পনাটিতে আমি ছিলাম জাস্ট আজ্ঞাবহ।
তিনসঙ্গী-ঠিকানা ছিল ৫৭/সি , কলেজ স্ট্রিট। যদিও যাতায়াত সব কিছুই কলেজ রো দিয়ে। ওখানেই সন্তোষ -এর মিষ্টির দোকান। শুভাপ্রসন্ন-র বাড়ি।
তখন আমি টিফিন করতাম খুব শস্তার একটা দোকানে। ভাজারুটি আর তরকারি।সম্ভবত একটাকায় তিনটি। তরকারি ফ্রি।
ঠিক এই পর্বে বিজয়দার মেয়ের বিয়েতে অজয় দাশগুপ্ত এবং আমি ওদের দেশের
বাড়িতে গিয়েছিলাম।শংকরপুর। সে-গল্প আগামীকাল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন