লক্ষ্মীছাড়া
জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়
পত্রিকা সম্পাদক শীতলদা হাতে পোড়ামাটির ছোট্টো গণেশমূর্তিটা
তুলে দিতেই সন্তু চিৎকার করে ওঠে,আমাকে গণেশ ক্যানে দাদা!
লকখি দিতে পারতে!চিরকালই তো লকখিছাড়া হয়ে রইলম।
গণেশ পেলে তো ব্যাবসা কোরতে হবেক,উটা আমি পারবো নাই,খ্যামা দাও!
তিনটে দকানে কাজে ঢুকাই ছিল বাবা,খোদ্দারদের বুঝাতে
পারি নাই।চাকরি নট।চারবিঘা জমি চাষ আমার অসাধ্যি।
এখন দুটো পাইভেট ব্যাচ করি আর কবিতা লিকি।একটা
লকখি যদিবা জুটেছিল কন্যাশ্রীর পুঁচিশ হাজার পেতেই
তার বাপ তাকে কোন দেশে যে পাচার কর্যে দিলেক জানতেই
লারলম।বুজে গেচি লকখি আমার কপালে নাই।ইটা লিয়ে
আমার কীইবা হবেক?
শীতলের নাছোড় হাসিতে জানলো বদল হবে না।তাই বিরক্তি
মেখেই ফিরছিলো বাড়ির দিকে।জগুর পানগুমটিতে এসে
বলে,একটা
পান দেত।সে মনেমনে ঠিক করে নিয়েছে গণেশটা জগুর গুমটিতে রেখে যাবে।
চোখ পড়লো তাকটার দিকে।দেখে একটা গণেশ তার পাশে দুটো লক্ষ্মী।
জিজ্ঞাসা করাতে জগু বলে,গণেশের বাহন আগের গণেশ ভেঙে
ফেলায় তার বউ নতুন গণেশ আর লক্ষ্মী কিনে দিয়েছে।কিন্তু
পুরনো লক্ষ্মীটাও রয়ে গেছে।কাল রাত্রে আবার বাহনেরা
গণেশ ভেঙেছে।
সন্তুর করুণ কাহিনি,যদিও জানা,জগু একটা লক্ষ্মীমূর্তি তাকে দিয়ে দিল।
খুশিমুখে সে বুকপকেটে লক্ষ্মীলাভ করে প্যাডেলে পা দিল।জগুও লকখি
পেয়ে ধন্য।দাসপাড়ার গলির অন্ধকার পার হবার সময় কীযে হলো
সে ঠিক বুঝলো না।তবে সাইকেল উলটে সে মাটিতে আর মূর্তিটা যে
কোথায় গেল তা দেখার জন্য দাসকাকিমা টর্চ আনা পর্যন্ত অপেক্ষা
করতে হলো।মালক্ষ্মী তখন পোড়ামাটির কয়েকটা বিচিত্র খণ্ড হয়ে তাকে ব্যঙ্গ করছেন।
গোপেশ্বরপল্লি,বিষ্ণুপুর,বাঁকুড়া-৭২২১২২
কথা-৭০০১৪৫৬৭২১/৯৭৩২২৩৭৬০৮
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন