সৌমিত্র রায় - এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী
গতকাল ছিল মহাপুরুষকথা। আজ উত্তমপুরুষদের কথা। যখনই উত্তমপুরুষদের কথা লিখে ফেললাম , সেই মুহূর্তে শব্দটি ব্যাকরণ অভিধান থেকঁ সরে আসলো বিদ্যার্থী বাংলা অভিধানে। ব্যাকরণের অর্থে যে সর্বনামটির প্রাধান্য ছিল, এখন আর তা বজায় থাকছে না। এখন উত্তম একটি বিশেষণ।
উত্তম = খুব ভালো , উৎকৃষ্ট , শ্রেষ্ট , উপাদেয় , চমৎকার।
প্রথমেই ' উপাদেয় ' অর্থটিকে এই লেখা থেকে সরিয়ে রাখলাম। রান্না বিষয়ক কোনো রচনায় ওর স্থান বেশ পাকাপোক্ত।
বহরমপুরের যে উত্তমপুরুষদের কথা লিখব তারা সকলেই আমার আত্মজন। কাজেই এই তালিকার কোনো ক্রমিক সংখ্যা নেই। সকলেই এক নম্বরে। দু-নম্বরে কেউ নেই। বা দু-নম্বরি কেউ নেই।
প্রথমেই রাখছি--- । শুরুতেই ভুল হল। লিখতে হবে: এখন বলছি অমিতাভ মৈত্র-র কথা। অমিতাভ আমার পূর্ব পরিচিত ছিল। ওর কাকা দেবীপ্রসাদ মৈত্র রাইটার্সে কাজ করতেন। ওখানেই তারাপদ রায় এবং হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ও কাজ করতেন। আমার আড্ডা ছিল এই মহাজনদের সঙ্গে।
নাসেরের হাত ধরে পৌঁছে গিয়েছিলাম অমিতাভ -র বাড়ি। তারপর পতনকথা , টোটেমভোজ , জলপাইগুড়ি , ঘাটাল বহু গল্প , উপন্যাস।
নিখিলকুমার সরকার বহরমপুর প্রোপারের মানুষ নয়। পাশেই দৌলতাবাদের ।কিন্তু আমি যখন বহরমপুর যেতাম নিখিল আমাকে একা রেখে দৌলতাবাদে ফিরে যেতে সাহস পেত না। সঙ্গে থেকে যেত। নিখিল আজকের কবিতার অন্যতম একজন প্রধান কবি। নিখিল এবং নীলিমা সাহা যখন নিনি পত্রিকা প্রকাশ শুরু করেছিল তখন নিনি- তে আমি প্রাণ এবং হাত খুলে লিখেছি। আমার একটি গদ্য শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর সাক্ষাৎকার লেখাটি নিখিল না বললে আমার লেখা হত না। ঠিক তেমনই অমিতাভ মৈত্র ঘোড়ার দৌড় সংক্রান্ত কবিতাটি না লিখলে ঘোড়ার মাঠ বিষয়ক গদ্যটিও আমার লেখা হত না।
নিখিলের মাছঘর -এর মতো কবিতা যদি লিখতে পারতাম , নিজেকে ধন্য মনে করতাম।
এবার লিখছি গভমেন্টের কথা।এই গভমেন্ট সরকার নয়। রায়। মৃণাল রায়। বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী। একসময় এই বাচিক শিল্পী-র একমাত্র কাজ ছিল বহরমপুর বইমেলায় কবিতাপাক্ষিক স্টলের বইবিক্রির প্রধান দায়িত্ব। বহরমপুরে এমন একটাও বাড়ি নেই , যে বাড়িতে মান্যবর শঙ্খ ঘোষ-এর সময়ের জএকসময় এই বাচিক শিল্পী-র একমাত্র কাজ ছিল বহরমপুর বইমেলায় কবিতাপাক্ষিক স্টলের বইবিক্রির প্রধান দায়িত্ব। বহরমপুরে এমন একটাও বাড়ি নেই , যেলছবি বইটি নেই। এবং তা সম্ভব হয়েছে একমাত্র মৃণাল-এর জন্যই।
এই মৃণাল রায় -এর মৌরীর বাগানে আমার ৬৯ তম জন্মদিনের অনুষ্ঠান হয়েছিল। বেশ বড়ো করে। মূলত মৃণালের উদ্যোগে। এসব কথা ভুলে যেতে নেই। আর ভুলেও যাবো না।
আর একজন মহাপুরুষ সন্দীপ বিশ্বাস। গণ সংগঠনের মানুষ। কবিতা লেখেন। আমাদের কপা পরিবারের একজন অভিভাবক সন্দীপ। সমাজ সচেতন । নেতৃত্ব দেবার সহজাত ক্ষমতা।এই ছোটোছোটো বাক্যে অনেক বড়োকথাকে প্রকাশ করলাম। আর কবিতার প্রতি দায়বদ্ধতার কোনো তুলনা হয়। স্পষ্টবচনের অধিকারী। তোষামোদ শব্দটি সন্দীপের ঘরের চৌকাঠ পেরিয়ে ঢোকার সাহস পায় না। আর একটি পরিচয় আমার কমরেড দীপক বিশ্বাসের বড়দা সন্দীপ।এটা আমাদের ঘরের কথা। ঘরের কথা বাইরে নিয়ে আসলাম, এর সঙ্গে ধ্বংস ও নির্মাণের কোনো যোগসূত্র নেই।
এত কিছু সত্ত্বেও সন্দীপ বিশ্বাস একজন প্রকৃত কবির নাম। আমাদের কপা পরিবারের একজন কবি।
আগামীকাল আরো উত্তমপুরুষকথা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন