বুলগেরিয়ার নতুন কবিতা
রুদ্র কিংশুক
কাতেরিনা স্টোইকোভা- ক্লেমার-এর কবিতা
কাতেরিনা স্টোইকোভা-ক্লেমার (Katerina Stoykova-Klemer, 1971)- এর জন্ম বুলগেরিয়ার বুরগাস অঞ্চলে। সেখানেই তাঁর বেড়ে ওঠা ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী হন এবং সেখানে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে একটি হাইটেক কোম্পানিতে প্রায় এক দশক কাজ করেন । ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি স্প্যাল্ডিং ইউনিভার্সিটি থেকে ক্রিয়েটিভ রাইটিং-এ স্নাতক হন। কাতেরিনা বুলগেরিয়ান ও ইংরেজি--- দুই ভাষাতেই মৌলিক কবিতা ও প্রবন্ধ লেখেন। তিনি দুই ভাষার মধ্যে অবিরত অনুবাদ ও সাংস্কৃতিক সংলাপ চালিয়ে যান। তাঁর কবিতা ইউরোপ, আমেরিকা ও বুলগেরিয়ার বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও দৈনিকে প্রকাশিত। বুলগেরিয়ান কবিতাকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দেবার কাজে কাতেরিনা অক্লান্ত। এ বিষয়ে তাঁর অবদান অগ্রনীর এবং প্রশংসাযোগ্য।
খাবার
টমাটো আনে ভালোবাসা।
আলুতে বাড়ে চেতনা।
পেঁয়াজ থেকে উৎসারিত করুণা।
তুঁত বদলের অনুপ্রেরণা।
ভুট্টা মায়ের ঔদার্য।
আর্টিচোক ভদ্র যোদ্ধা।
তুমি প্রতিবেশীকে পারো না ভালবাসতে
যদি না খাও শাক-সবজি।
এক কাপ ফলরসেশর করুণায় তুমি
থামাতে পারো বিশ্বযুদ্ধ ।
সংলাপ কবিতা
১.
আমি তোমার সঙ্গ উপভোগ করি
আশ্রয়দাতা হাসে।
তোমাকে ছাড়া জীবন
কল্পনাতীত, বলে পরাশ্রয়ী।
২.
কতদিন ধরে তুমি এভাবে আছো?
বাক্স খুলে আমি বলি কিসমিস শব্দটিকে।
বাঁচাও! বাঁচাও ! সে চেঁচায় আর আমি কাঁদতে চেষ্টা করি ।
৩.
আমাকে পরো জীবন-বাঁচোয়া শব্দটি বলে
যখন সে আমার কাছাকাছি ভাসে।
আমাকে ভাবো
যেন একটা অঙ্গুরীয় ।
৪.
তাহলে কী শিখলে তুমি?
কৌতূহল বিড়ালকে বলে, তারপর
লাঠি দিয়ে খোঁচায় তার কঙ্কাল।
৫
আমি তোমাকে এঁকেছি তরুণতর,
আমি বলেছি ন্যাকা শব্দটি ।
আমি তোমাকে এঁকেছি সুখীতর ,
সে উত্তর দিয়েছে ।
৬.
আমি আজ খেয়েছি সতেরটি আপেল , বাঁদরের অহংকার।
চমৎকার, খুশিতে ডগমগ মৌলিক সংখ্যা, হাততালি দিল তিনবার ৷
অসম্মতি
#
বাড়তি টায়ার
সর্বদাই সন্ত্রস্ত
ভেবে যে একদিন
তার পালা আসবে
বহন করতে হবে
গাড়ির ভার
যাতে
সে এতোকাল চেপে এসেছে
#
একবার
একটু পিছিয়ে
সে বিড়বিড় করে তার ভয়
উইন্ডশিল্ড ওয়াইপারদের কাছে
কিন্তু নীরব বিচক্ষণতায়
তারা কেবল মাথা নাড়ে
#
আর তাই
সে ভয়ে লুকায়
ঢাকনার নিচে
অন্ধকারে নিচে শুয়ে থাকে
আর বৃষ্টির দিনে সে থাকে
বিশেষত
চুপচাপ
#
অনেক
সময় বাড়তি টায়ার
গণনা করে তার সৌভাগ্য
এক দুই তিন চার
এক দুই তিন চার
#
স্বীকার করে
প্রকৃতপক্ষে
যদি না সর্বদা ভয়
তাড়া করে ফিরত
তবে বাড়তি হয়ে থাকা
মোটেও খারাপ কাজ নয়
#
সত্যিই
একটু ম্যাড়মেড়ে
কিন্তু চালু টায়ার হওয়া
প্রতিদিনের ব্যবহারে
মনে হয় সত্যি
ভয়ের
#
ইতিমধ্যে
উদ্বেগের গভীর খাত
আঁকাবাঁকা জড়িয়ে
তার কপাল
পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে
#
মরিয়া
সে পড়ে
সমস্ত পাঠাগারের বই
সেখুঁজে পায়
ভুলে-যাওয়াকে তোরঙ্গে
শোনে
পিছনের সিটে বসা পন্ডিত যাত্রীদের
খোশগল্প
রেডিও টক
বিখ্যাত মনস্তত্ত্ববিদদের
বুঝতে চেষ্টা করে
কোথা থেকে তার অসম্মতি
উঠে আসে
#
বিশ্বাস করো আমাকে
সে গভীর লজ্জিত
নিজেকে অযোগ্য অনুভব করে
ওই চাকাদের সঙ্গে তুলনায়
যারা নিশ্চিত করে অগ্রগতি
টানে ভারী বোঝা
ঘোরাই চক্রকার মুখ
হাইওয়ে
এবং ময়লা ভরা
রাস্তায়
#
কত
সে ঈর্ষা করে তাদের
যেভাবে তারা বহন করে
নিজেদের
কত সে ইচ্ছে করে ইচ্ছে করে
তাদের মত হয়ে উঠতে
এতটা আত্মবিশ্বাসী
আর কেতা দুরস্ত
তোমার সৌজন্যে আমরা এমন সব কবিতা পড়ার সুযোগ পাই। ভালোবাসা তোমাকে।
উত্তরমুছুনএইভাবেই আরও ভালো ভালো কবিতা পড়াও।
উত্তরমুছুন