ছোটদের গল্প:
নিশিডাক
রুদ্র কিংশুক
বাড়ির যে কোনো পুজোয় ফুল পাড়ার দায়িত্ব বুলুর। কেউ তাকে এ দায়িত্ব দেয়নি । সে নিজের থেকেই এ দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে। গ্রামের কোন বাগানে কী ফুলগাছ আছে, সে তার নখদর্পণে।গ্রামের অন্য ছেলের আগে গিয়ে ফুল পেড়ে ফেলতে হবে --- এই ভাবনায় পুজোর আগের দিন তার চোখের পাতা বুজতেই চায়না।
কাল বাড়িতে পৌষলক্ষ্মীর পুজো। ফুলের সাজি মাথার কাছে রেখে বুলু ঘুমাতে গেল। সকাল সকাল উঠে পশ্চিম পাড়ার পুকুরের পাড়ে ধানুপিসিদের বাগানে ফুল পাড়তে হবে। এ বাগানে কত রকমের যে ফুলগাছ। বুলু ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখল ধানুপিসিদের । বাগানের গাছে গাছে ফুলগুলো তাকে ডাকছে। হঠাৎ বুলুর ঘুম ভাঙলো। ফুলের সাজি নিয়ে বুলুর দৌড়। রাস্তাঘাট আলো থৈ থৈ। সকাল তো হয়ে গেছে। কিন্তু কারো ঘুম ভাঙ্গেনি আজ । ভালোই হয়েছে। সব ফুল সে একাই তুলবে ।
বাগানে গিয়ে বুলু দেখে কেউ এখনো আসতে পারেনি । বাগানে সে চাঁপাগাছের ডাল নুইয়ে ফুল পাড়তে লাগল। ঝুঁকেপড়া জবার ডাল থেকে ফুল তুল। উঁচু উঁচু ডালগুলো আজকে কে যেন মাটির কাছে নামিয়ে এনেছে । দেখতে দেখতে সাজি ভরে উঠলো। জামার পকেট, প্যান্টের পকেট ভরে গেল ফুলে ফুলে। দূরে খেজুরগাছের মাথায় একটা লক্ষ্মীপেঁচা ডেকে উঠল। বুলুর মনে হলো এবার বাড়ি ফিরতে হবে। তার খুব আনন্দ হচ্ছে। বাগানের বাইরে এসে সে একটা ছায়ামূর্তি দেখল। অনেকটা দূর থেকে সেই মূর্তি বলল ---এখানে এত রাতে কী করতে এসেছো ?
বুলু বলল --- আজ লক্ষ্মীপুজো।মা ফুল পাড়তে পাঠিয়েছে , পিসি।
বুলু এবার প্রায় দৌড় লাগাল। বাড়ির দিকে। বাগান থেকে তাদের বাড়ি বেশ খানিকটা দূরেই। রাস্তায় এখনো কোনো লোক বার হয়নি। রাস্তা আলোয় ভরা। একটা শেয়াল রাস্তা পার হয়ে খড়ি নদীর চরের দিকে ছুটে গেল। তার চোখদুটো জ্বলছে। বুলু বাড়িতে ঢুকেই দেখল মা উঠানে ডালিমগাছের কাছে দাঁড়িয়ে । তাকে দেখেই জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে উঠলো মা।
----- এত রাতে কোথায় গিয়েছিলি?
বুলু বলল--- কেন ধানুপিসিদের বাগানে ফুল পাড়তে!
পরের দিন সবাই বলাবলি করতে লাগল বুলুকে নাকি নিশিতে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল ফুলবাগানে।
নিশিডাক
রুদ্র কিংশুক
বাড়ির যে কোনো পুজোয় ফুল পাড়ার দায়িত্ব বুলুর। কেউ তাকে এ দায়িত্ব দেয়নি । সে নিজের থেকেই এ দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে। গ্রামের কোন বাগানে কী ফুলগাছ আছে, সে তার নখদর্পণে।গ্রামের অন্য ছেলের আগে গিয়ে ফুল পেড়ে ফেলতে হবে --- এই ভাবনায় পুজোর আগের দিন তার চোখের পাতা বুজতেই চায়না।
কাল বাড়িতে পৌষলক্ষ্মীর পুজো। ফুলের সাজি মাথার কাছে রেখে বুলু ঘুমাতে গেল। সকাল সকাল উঠে পশ্চিম পাড়ার পুকুরের পাড়ে ধানুপিসিদের বাগানে ফুল পাড়তে হবে। এ বাগানে কত রকমের যে ফুলগাছ। বুলু ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখল ধানুপিসিদের । বাগানের গাছে গাছে ফুলগুলো তাকে ডাকছে। হঠাৎ বুলুর ঘুম ভাঙলো। ফুলের সাজি নিয়ে বুলুর দৌড়। রাস্তাঘাট আলো থৈ থৈ। সকাল তো হয়ে গেছে। কিন্তু কারো ঘুম ভাঙ্গেনি আজ । ভালোই হয়েছে। সব ফুল সে একাই তুলবে ।
বাগানে গিয়ে বুলু দেখে কেউ এখনো আসতে পারেনি । বাগানে সে চাঁপাগাছের ডাল নুইয়ে ফুল পাড়তে লাগল। ঝুঁকেপড়া জবার ডাল থেকে ফুল তুল। উঁচু উঁচু ডালগুলো আজকে কে যেন মাটির কাছে নামিয়ে এনেছে । দেখতে দেখতে সাজি ভরে উঠলো। জামার পকেট, প্যান্টের পকেট ভরে গেল ফুলে ফুলে। দূরে খেজুরগাছের মাথায় একটা লক্ষ্মীপেঁচা ডেকে উঠল। বুলুর মনে হলো এবার বাড়ি ফিরতে হবে। তার খুব আনন্দ হচ্ছে। বাগানের বাইরে এসে সে একটা ছায়ামূর্তি দেখল। অনেকটা দূর থেকে সেই মূর্তি বলল ---এখানে এত রাতে কী করতে এসেছো ?
বুলু বলল --- আজ লক্ষ্মীপুজো।মা ফুল পাড়তে পাঠিয়েছে , পিসি।
বুলু এবার প্রায় দৌড় লাগাল। বাড়ির দিকে। বাগান থেকে তাদের বাড়ি বেশ খানিকটা দূরেই। রাস্তায় এখনো কোনো লোক বার হয়নি। রাস্তা আলোয় ভরা। একটা শেয়াল রাস্তা পার হয়ে খড়ি নদীর চরের দিকে ছুটে গেল। তার চোখদুটো জ্বলছে। বুলু বাড়িতে ঢুকেই দেখল মা উঠানে ডালিমগাছের কাছে দাঁড়িয়ে । তাকে দেখেই জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে উঠলো মা।
----- এত রাতে কোথায় গিয়েছিলি?
বুলু বলল--- কেন ধানুপিসিদের বাগানে ফুল পাড়তে!
পরের দিন সবাই বলাবলি করতে লাগল বুলুকে নাকি নিশিতে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল ফুলবাগানে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন