শনিবার, ৩০ মে, ২০২০

প্রভাত চৌধুরী || সৌমিত্র রায়- এর জন্য গদ্য || ধারাবাহিক গদ্য

সৌমিত্র রায়- এর জন্য গদ্য
প্রভাত চৌধুরী

২৮.
কথা ছিল দ্বিতীয় বর্ষ পূর্তি উৎসবের কথা লিখব এই কিস্তিতে। কিন্তু পালটে গেল সেই সিদ্ধান্ত। বিকেলে নাসের-এর সঙ্গে কথাবার্তা হয়। সেই বার্তা-বিনিময়ে উঠে এল বইমেলা দৈনিক - এর কথা। পুরো হল :
কবিতাপাক্ষিক বইমেলা দৈনিক।
দৈনিক বাংলা-র জন্য এই লেখাটিতে বইমেলা দৈনিক-এর কথা বাদ পড়ে যাওয়াটা ক্ষমারও অযোগ্য। তা হোক ।দেরিতে এল। যা না-আসার থেকে শ্রেয়।
কবিতাপাক্ষিক ১৬- তে  ৯ পৌষ ১৪০০ বা 25 ডিসেম্বর 1993 , ব্যাক কভারে ঘোষণা করেছিলাম :
26 জানুয়ারি  1994 থেকে শুরু হচ্ছে কলকাতা বইমেলা।
28 জানুয়ারি থেকে 06 ফেব্রুয়ারি  , এই দশদিন প্রকাশিত হতে চলেছে : কবিতাপাক্ষিক বইমেলা দৈনিক।
কী কী থাকবে তার দশদফা সূচি।
এই দৈনিক- এ নাসেরকে এডিটোরিয়াল টিমে যুক্ত করা গিয়েছিল। যদিও নাসেরের মৃদু আপত্তি ছিল।
দৈনিকের সাইজ ঠিক হয়েছিল ট্যাবলয়েড। যা সংবাদ দৈনিকের অর্ধেক।
সিদ্ধান্ত হয়েছিল যেখানে বা যে মেশিনে দৈনিক সংবাদপত্র ছাপা হয় , বইমেলা দৈনিকও সেই মেশিনেই ছাপা হবে। এজন্য সংবাদ প্রতিদিনের সঙ্গেও কথা বলিছিলাম। শেষে বন্ধু কবি শ্যামল বসু-র যোগাযোগে ঠিক করেছিলাম চৌরঙ্গি-র একটি প্রেস। যেখানে তখন গণশক্তি , ওভারল্যান্ড প্রভৃতি দৈনিকগুলি ছাপা হত।
এর জন্য নিউজপ্রিন্টের একটা গোটা রোল তুলে দিয়েছিলাম প্রেসকে।
আর পেজ মেকাপের দায়িত্ব পালন করেছিলেন শিল্পী রমাপ্রসাদ দত্ত। তিনি নিজ দায়িত্ব নিয়ে পুরো কাজটা করেছিলেন। এবং ছাড়া-র অলংকরণের জন্য দুই তরুণ শিল্পীকে নিয়ে এসেছিলেন। বলা উচিত নয় , তবু বলছি , এই সম্পূর্ণ কাজের জন্য রমাপ্রসাদ দত্ত- কে এক টাকা দেবারও সাহস দেখাতে পারিনি। রমাপ্রসাদের অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে আমরা সেই যুদ্ধে জয় লাভ করেছিলাম।
কাজটা চলছিল 36 ডি , হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের কবিতাপাক্ষিক তথা আমার গৃহকোণে। রমাপ্রসাদ জানালেন কাজের জায়গাটা ছোটো হয়ে যাচ্ছ

কাজটা চলছিল 36 ডি , হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের কবিতাপাক্ষিক তথা আমার গৃহকোণে। রমাপ্রসাদ জানালেন কাজের জায়গাটা ছোটো হয়ে যাচ্ছে। তা শুনে কবি মৃত্যুঞ্জয় সেন প্রস্তাব দিলেন ওঁর ফ্ল্যাটে করা যেতে পারে। অতএব সূর্যতোরণ , সি আই টি রোড , ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিকাল কলেজের পাশে উঠে এল কাজের জায়গা।

এই পত্রিকার যাবতীয় ড্যামি শিটগুলি পেয়েছিলাম প্রতিদিন মারফৎ।এবং তা কথাসাহিত্যিক প্রফুল্ল রায় -এর সৌজন্যে
আগে ম্যাটার ডি টি পি করে আর্টপুল বানিয়ে ড্যামিশিটে কেটে কেটে পেস্ট করতে হত।অলংকরণ সহ। পুরো পাতা মেকাপ করতে হত। প্রতিদিন চার পৃষ্ঠা। দশদিনে 4×10 =40 পৃষ্ঠা। এই অযোগ্য কবিরা এটা করতে সমর্থ হয়েছিল একটি মাত্র শব্দের ওপর ভিত্তি করে। শব্দটি হল : সংকল্প । আমরা করবই।আমাদের পারতেই হবে।  মাত্র ১৬ টি পাক্ষিক সংখ্যা বা আট মাসের কার্যক্রম থেকে দশদিন দৈনিক প্রকাশের সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল না ভুল তার বিচার করা হত। কিন্তু এখনো হয়নি। না হবার কারণ আমার 'সাক্ষাৎকার ' পর্বের কবিতাগুলি লেখা। এখন আপশোশ করি , কেন লিখতে গিয়েছিলাম সাক্ষাৎকার। কেন লিখেছিলাম , কীভাবে , কোন পরিস্থিতিতে লিখেছিলাম , এই লেখাতেই সেসব জানিয়ে দেব। কথা দিলাম।
চৌরঙ্গি থেকে পার্ক স্ট্রিট বইমেলার হাঁটাপথ।তাও ট্যাক্সিতেই ভরসা রেখেছিলাম ।
সেবার কবিতাপাক্ষিক -এর নিজস্ব স্টল কিংবা টেবিলও ছিল না।আমরা বসেছিলাম সমীরণ মজুমদারের ' অমৃতলোক '- এর টেবিলে এবং তার সামনের মাঠে। ভেবেছিলাম মেলার মধ্যে কিছু হকারের মাধ্যমে বিক্রির ব্যবস্থা করা যাবে। সেটা পারা যায়নি।কিন্তু কবিকৃতি , কবিপত্র এবং প্রো রে নাটা-র টেবিলে বিক্রি করেছিল এই পত্রিকাগুলি। সব থেকে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল , মহাদিগন্ত-সম্পাদক কবি উত্তম দাশ তাঁর স্টল থেকে বইমেলা দৈনিক বিক্রির জন্য নির্দিষ্ট একজনকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ,যিনি শুধুমাত্র মহাদিগন্ত স্টলের গেটে দাঁড়িয়ে বইমেলা দৈনিক বিক্রি করেছেন দশদিন।দশ- দশটা সারাদিন। আজকের দিনসমীরণে এটা ভাবাও যায় না।
আগামীকালের চিন্তা আগামীকালই জানে। আমি নিমিত্তমাত্র।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Registration (Online)

Trainee REGISTRATION (ONLINE)

                                                                                    👇           👉             Click here for registration...