অণুগল্প || সাইন বোর্ড || সৌমিত্র রায়
বাথরুমে ছিলেন অতনু ৷ রিং বাজছে ৷ ধরতে পারলেন না কলটা ৷ বেরিয়ে এসে দেখলেন অচেনা ফোন নাম্বার ৷ তবে তৎক্ষনাৎ কল ব্যাক করলেন ৷ একটা রোমান্টিক হিন্দী গানের কলার টিউন...
অতঃপর... "হ্যালো... স্যার আমি নাজিম বলছি ৷ পাঁচবেড়িয়ার পঞ্চায়েতের স্বামী..."
"হ্যাঁ, বলো ৷ তবে পঞ্চায়েত কেন বলছো ? বলো পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী ৷ হা হা হা"
ও প্রান্ত: (মৃদু হাসি) ওই লেগে আর কী স্যার... গাঁয়ের মানুষ... ৷ স্যার, করোনার যা অবস্থা ৷ ভালো আছেন ?
অতনু: "হ্যাঁ গো ৷ চলে যাচ্ছে ৷ এই তো অফিস থেকে ফিরলাম ৷ বলো তোমার খবর কী ? কেমন আছো ?"
নাজিমুদ্দিন: "স্যার এমনি সবই ভালো ৷ তবে এনআরইজিএসের কাজ লিয়ে আমাদের সংসদে ঝামেলা হচ্ছে ৷"
"কেন, ঝামেলা কেন ? এই তো এলাম অফিস থেকে ৷ অন্য একটা ঝামেলা ছিল মিটমাট করে এলাম তো ! বলো, আবার কি হল ?
"স্যার, রবিউল ১০০ দিনের কাজ শুরু করে দিয়েছে আমার স্ত্রী পঞ্চায়েত সদস্যা তাকেও জানাইনি আর প্রধানকেও জানায়নি ৷"
"ও, রবিউল তো সুপারভাইজার ৷ কিন্তু তোমার স্ত্রী আর প্রধান না সই করলে তো মাস্টাররোল নিতে পারবে না ৷ আর পঞ্চায়েত সদস্যা, প্রধান কিংবা আমি নির্বাহী সহায়ক আমাদের না জানিয়ে কাজ শুরু করবে কী করে !! তুমি চিন্তা করো না ৷ দেখছি কি ব্যাপার !"
"না স্যার, রবিউল আমাদের এখানের পুরানো নেতা ৷ সুপারভাইজারও সে ৷ ওদের সেটিং আছে ৷ আমি এম এল এ সাহেবকে ফোন করেছি ৷ এম এল এ সাহেব আপনাকে জানাতে বললো বিষয়টি ৷"
"আচ্ছা, তুমি একেবারে এমএলএ সাহেবকেও জানিয়েছো এখনই ৷ রবিউল তো মাস্টাররোল পাবে না, প্রধান আর পঞ্চায়েত সদস্যার অনুমতি ছাড়া ৷ আমি ফোন করে বলে দিচ্ছি ৷ আর তোমাদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বগুলো মিটিয়ে নাও ৷ একে তো করোনার জন্য লকডাউনের ঝামেলা ৷ তার উপর তোমাদের দ্বন্দ্ব ৷ গরীব মানুষগুলো যেন এই সময় কাজ করতে পারে খেয়াল রাখো ৷"
"হ্যাঁ স্যার, রবিউল মানছে নি ৷ কাজের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে ৷ আপনি কিছু একটা ব্যবস্থা করুন ৷"
"সাইনবোর্ড ? আচ্ছা, দেখছি ৷ তুমি আগামিকাল সকালে এসো অফিসে ৷ তোমাদের ডেকে নিচ্ছি ৷ চিন্তা করো না ৷... আর তোমার ওখানে পরিযায়ী শ্রমিক যারা আছে, ওদেরও কাজে নিতে হবে ৷ এসো মিটিংয়ে ৷ সবাইকে মাস্ক পরে আসতে বলবে, কেউ তো কিছুই তেমন মানছে না দেখছি ৷ যাইহোক এসো কথা হবে ৷"
খুবই অস্বস্তিতে পড়ে গেলো অতনু ৷ তাকেও কেমন অপমানিত লাগছে ৷ গ্রামের মানুষগুলোর মধ্যেও কত অসচেতনতা ৷ আর লকডাউন ৷ অন্যরা গৃহবন্দি, তাকে এতদূর প্রাইভেট জার্নি করে অফিস করতে হচ্ছে ৷
অতিরিক্ত পরিশ্রম ৷
বাড়িতে ঢুকেও শান্তি নেই ৷ পার্টির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চাপও এসে পড়ছে কর্মচারীদের উপর ৷
এইসব ভাবতে ভাবতে অতনু আবার বাথরুমের দিকে যাচ্ছে ৷ করোনার সচেতনতা ৷ গরম জলে সাবান মেখে স্নান সেরে নিতে হবে ৷
হঠাৎ তার ক্লাস ফোরে পড়া ছেলেটি তাকে প্রশ্ন করে, "বাবা, ওই যে তুমি কী একটা বললে সাইনবোর্ড... তোমাদের অফিসে ওটা কী কাজে লাগে ?..."
বাথরুমে ছিলেন অতনু ৷ রিং বাজছে ৷ ধরতে পারলেন না কলটা ৷ বেরিয়ে এসে দেখলেন অচেনা ফোন নাম্বার ৷ তবে তৎক্ষনাৎ কল ব্যাক করলেন ৷ একটা রোমান্টিক হিন্দী গানের কলার টিউন...
অতঃপর... "হ্যালো... স্যার আমি নাজিম বলছি ৷ পাঁচবেড়িয়ার পঞ্চায়েতের স্বামী..."
"হ্যাঁ, বলো ৷ তবে পঞ্চায়েত কেন বলছো ? বলো পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী ৷ হা হা হা"
ও প্রান্ত: (মৃদু হাসি) ওই লেগে আর কী স্যার... গাঁয়ের মানুষ... ৷ স্যার, করোনার যা অবস্থা ৷ ভালো আছেন ?
অতনু: "হ্যাঁ গো ৷ চলে যাচ্ছে ৷ এই তো অফিস থেকে ফিরলাম ৷ বলো তোমার খবর কী ? কেমন আছো ?"
নাজিমুদ্দিন: "স্যার এমনি সবই ভালো ৷ তবে এনআরইজিএসের কাজ লিয়ে আমাদের সংসদে ঝামেলা হচ্ছে ৷"
"কেন, ঝামেলা কেন ? এই তো এলাম অফিস থেকে ৷ অন্য একটা ঝামেলা ছিল মিটমাট করে এলাম তো ! বলো, আবার কি হল ?
"স্যার, রবিউল ১০০ দিনের কাজ শুরু করে দিয়েছে আমার স্ত্রী পঞ্চায়েত সদস্যা তাকেও জানাইনি আর প্রধানকেও জানায়নি ৷"
"ও, রবিউল তো সুপারভাইজার ৷ কিন্তু তোমার স্ত্রী আর প্রধান না সই করলে তো মাস্টাররোল নিতে পারবে না ৷ আর পঞ্চায়েত সদস্যা, প্রধান কিংবা আমি নির্বাহী সহায়ক আমাদের না জানিয়ে কাজ শুরু করবে কী করে !! তুমি চিন্তা করো না ৷ দেখছি কি ব্যাপার !"
"না স্যার, রবিউল আমাদের এখানের পুরানো নেতা ৷ সুপারভাইজারও সে ৷ ওদের সেটিং আছে ৷ আমি এম এল এ সাহেবকে ফোন করেছি ৷ এম এল এ সাহেব আপনাকে জানাতে বললো বিষয়টি ৷"
"আচ্ছা, তুমি একেবারে এমএলএ সাহেবকেও জানিয়েছো এখনই ৷ রবিউল তো মাস্টাররোল পাবে না, প্রধান আর পঞ্চায়েত সদস্যার অনুমতি ছাড়া ৷ আমি ফোন করে বলে দিচ্ছি ৷ আর তোমাদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বগুলো মিটিয়ে নাও ৷ একে তো করোনার জন্য লকডাউনের ঝামেলা ৷ তার উপর তোমাদের দ্বন্দ্ব ৷ গরীব মানুষগুলো যেন এই সময় কাজ করতে পারে খেয়াল রাখো ৷"
"হ্যাঁ স্যার, রবিউল মানছে নি ৷ কাজের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে ৷ আপনি কিছু একটা ব্যবস্থা করুন ৷"
"সাইনবোর্ড ? আচ্ছা, দেখছি ৷ তুমি আগামিকাল সকালে এসো অফিসে ৷ তোমাদের ডেকে নিচ্ছি ৷ চিন্তা করো না ৷... আর তোমার ওখানে পরিযায়ী শ্রমিক যারা আছে, ওদেরও কাজে নিতে হবে ৷ এসো মিটিংয়ে ৷ সবাইকে মাস্ক পরে আসতে বলবে, কেউ তো কিছুই তেমন মানছে না দেখছি ৷ যাইহোক এসো কথা হবে ৷"
খুবই অস্বস্তিতে পড়ে গেলো অতনু ৷ তাকেও কেমন অপমানিত লাগছে ৷ গ্রামের মানুষগুলোর মধ্যেও কত অসচেতনতা ৷ আর লকডাউন ৷ অন্যরা গৃহবন্দি, তাকে এতদূর প্রাইভেট জার্নি করে অফিস করতে হচ্ছে ৷
অতিরিক্ত পরিশ্রম ৷
বাড়িতে ঢুকেও শান্তি নেই ৷ পার্টির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চাপও এসে পড়ছে কর্মচারীদের উপর ৷
এইসব ভাবতে ভাবতে অতনু আবার বাথরুমের দিকে যাচ্ছে ৷ করোনার সচেতনতা ৷ গরম জলে সাবান মেখে স্নান সেরে নিতে হবে ৷
হঠাৎ তার ক্লাস ফোরে পড়া ছেলেটি তাকে প্রশ্ন করে, "বাবা, ওই যে তুমি কী একটা বললে সাইনবোর্ড... তোমাদের অফিসে ওটা কী কাজে লাগে ?..."
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন