গল্প || গরম ভাতের গন্ধ
চন্দনা দত্ত
রাত্রি ১২টা বেড়িয়ে পড়ল শিবু। পাক্কা খবর আছে তার কাছে। সরকার বাড়ির বড়বৌ তার মুক্তার হারটা রাত্রি বেলা খুলে আলমারি তে রাখে।এই খবর টুকুই যথেষ্ট শিবুর কাছে।শিবু আসলে ছিচকে চোর। খবরটা দিয়েছে তার গুরু নিতাই চোর। নিতাই এর বয়স হয়েছে,তাই সে যা খবর পায় তার শিষ্যদের দিয়ে দেয়।ওই খান থেকে প্রনামি হিসাবে যা পায় তাতে তার চলে যায়। শিবু কে সেই খবরটা দিয়েছে।হারটা আজ রাতে সরাতে না পারলে হাত ছাড়া হয়ে যাবে। শিবু রাস্তায় নাবে।বৌকে বলে যায় পান্তা ঢাকা দিয়ে শুয়ে পড়তে।আমি ঠিক খেয়ে নেব। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ তার নাকে আসে গরম ভাতের গন্ধ।আহা চালটা বোধহয় খুব দামী। গন্ধটার উৎস সন্ধান করতে গিয়ে বুঝতে পারে ওটা আসছে রতনদার ঘর থেকে।রতনদা ওর মতো ই এক চোর। নিতাই দার শিষ্য তবে একটু সিনিয়র। রতনদা আজকাল এই গ্ৰাম বা তার আশেপাশের গ্ৰামে কাজ করেনা। কিন্তু কোথাও যে করে তা ও বুঝতে পারে।পরে যখন পবন দারোগা জেরা করার জন্য তাকে ডাকে তখন অবাক হয়ে যায়। কাজের ধারা দেখে বুঝতে পারে ওটা রতনদার হাতের কাজ।রতনের ঘরেও পুলিশ কিছু পায়না তাই ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে রতন চোর। কিন্তু রতনদা মাল বেচে কোথায়? আজকাল রতনদা এক নেতার পাল্লায় পড়েছে। মাঝে মাঝে মিছিলে দেখতে পাওয়া যায়। ভাবতে ভাবতে সে রতনের জানলার ধারে দাঁড়ায়।
ভেতরে আয়।
কে ডাকল এতো রতনদার গলা।রতনদার আজকাল পয়সা ভাল করেছে,
। মাঝরাতে গরম ভাতের গন্ধ ছড়াচ্ছে। শিবু দরজা ঠেলে ভেতরে ঢোকে। রতনদা কি করে বুঝল যে সে এসেছে।
সরকার বাড়ি যাচ্ছিস।গিয়ে লাভ হবেনা শিবু অবাক হল।
সে কি,এই খবরটা রতনদা পেল কোথায়।
রতন বলে ওঠে ওরে হতভাগা ঐ হারটা যে পড়েছে তার গায়ে একটুও সোনা নেই।সব ইমিটেশন।আর ঐ মালাটাও ঝুটো মুক্তোর মালা। নাহলে প্রতিরাতে শোবার আগে খোলা আলমারি তে রাখতোনা। আসল মাল ব্যাঙ্কের লকারে।এমন ভাব দেখায় যে ওটাই আসল মাল।
শিবু হতাশ হল। আসলে সে এতটা তলিয়ে ভাবেনি।গুরুর কাছে খবর পেয়েই কাজে নেবে পড়েছে।একটু হোম ওয়ার্ক দরকার ছিল। রতনদার কথায় হুঁশ ফেরে।
আরে তোকে বলার আগে গুরু আমাকে ধরেছিল।আমি তোর নামটা সুপারিশ করি। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানলাম এই ব্যাপার।জানি তুই এ পথ দিয়ে যাবি তাই ---
যাকগে ওসব,শোন কাজ আছে করে ফেল অনেক টাকা পাবি।
কি কাজ, কতটাকা?
সে তোকে ভাবতে হবে না এই যে শিশিটা দিচ্ছি
কিসের শিশি
ওষুধের,তুই শুধু গোবিন্দ নস্করের বাড়ি ঢুকে টেবিল থেকে আসল শিশিটা নিয়ে এই শিশিটা রেখে আসবি।তোর কাছে এই কাজ নস্যি।
কি আছে ঐ শিশিতে?না আমি পারবনা।
আসলে নস্কর বাবু উঠতি নেতা , খুব পরোপকারী। ওকে খুব সাহায্য করে।সে বুঝতে পারে ঐ শিশিতে বিষ আছে। পথের কাঁটা সরাবার ব্যবস্থা।
তুই পারবিনা তাহলে।
না, তুমি নিজেই করনা। ছোটখাটো চোর, মানুষ হত্যা পারবনা।
ঠিক আছে।
গরম ভাতের গন্ধটা আর শিবুর ভালো লাগছেনা।সে পথে নেবে আসে। রতনদার কাজের প্রকৃতি সে বুঝতে পারে। ভালো লাগলো না।এই কাজ তার দ্বারা হবে না।
রতনের ফোনটা বেজে ওঠে।
না রাজি হলনা শিবু
সে কি রে তবে তো বিপদ,ঠিক আছে আমি দেখছি।
পরদিন তেঁতুল তলায় শিবুর নলি কাটা দেহটা আবিষ্কার করে ভোরের কৃষকরা।শিবুর বৌ শিবুর অপেক্ষায় থেকে ঘুমিয়ে পড়েছে। পান্তা ভাত তেমনি ঢাকা দেওয়া।
চন্দনা দত্ত
রাত্রি ১২টা বেড়িয়ে পড়ল শিবু। পাক্কা খবর আছে তার কাছে। সরকার বাড়ির বড়বৌ তার মুক্তার হারটা রাত্রি বেলা খুলে আলমারি তে রাখে।এই খবর টুকুই যথেষ্ট শিবুর কাছে।শিবু আসলে ছিচকে চোর। খবরটা দিয়েছে তার গুরু নিতাই চোর। নিতাই এর বয়স হয়েছে,তাই সে যা খবর পায় তার শিষ্যদের দিয়ে দেয়।ওই খান থেকে প্রনামি হিসাবে যা পায় তাতে তার চলে যায়। শিবু কে সেই খবরটা দিয়েছে।হারটা আজ রাতে সরাতে না পারলে হাত ছাড়া হয়ে যাবে। শিবু রাস্তায় নাবে।বৌকে বলে যায় পান্তা ঢাকা দিয়ে শুয়ে পড়তে।আমি ঠিক খেয়ে নেব। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ তার নাকে আসে গরম ভাতের গন্ধ।আহা চালটা বোধহয় খুব দামী। গন্ধটার উৎস সন্ধান করতে গিয়ে বুঝতে পারে ওটা আসছে রতনদার ঘর থেকে।রতনদা ওর মতো ই এক চোর। নিতাই দার শিষ্য তবে একটু সিনিয়র। রতনদা আজকাল এই গ্ৰাম বা তার আশেপাশের গ্ৰামে কাজ করেনা। কিন্তু কোথাও যে করে তা ও বুঝতে পারে।পরে যখন পবন দারোগা জেরা করার জন্য তাকে ডাকে তখন অবাক হয়ে যায়। কাজের ধারা দেখে বুঝতে পারে ওটা রতনদার হাতের কাজ।রতনের ঘরেও পুলিশ কিছু পায়না তাই ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে রতন চোর। কিন্তু রতনদা মাল বেচে কোথায়? আজকাল রতনদা এক নেতার পাল্লায় পড়েছে। মাঝে মাঝে মিছিলে দেখতে পাওয়া যায়। ভাবতে ভাবতে সে রতনের জানলার ধারে দাঁড়ায়।
ভেতরে আয়।
কে ডাকল এতো রতনদার গলা।রতনদার আজকাল পয়সা ভাল করেছে,
। মাঝরাতে গরম ভাতের গন্ধ ছড়াচ্ছে। শিবু দরজা ঠেলে ভেতরে ঢোকে। রতনদা কি করে বুঝল যে সে এসেছে।
সরকার বাড়ি যাচ্ছিস।গিয়ে লাভ হবেনা শিবু অবাক হল।
সে কি,এই খবরটা রতনদা পেল কোথায়।
রতন বলে ওঠে ওরে হতভাগা ঐ হারটা যে পড়েছে তার গায়ে একটুও সোনা নেই।সব ইমিটেশন।আর ঐ মালাটাও ঝুটো মুক্তোর মালা। নাহলে প্রতিরাতে শোবার আগে খোলা আলমারি তে রাখতোনা। আসল মাল ব্যাঙ্কের লকারে।এমন ভাব দেখায় যে ওটাই আসল মাল।
শিবু হতাশ হল। আসলে সে এতটা তলিয়ে ভাবেনি।গুরুর কাছে খবর পেয়েই কাজে নেবে পড়েছে।একটু হোম ওয়ার্ক দরকার ছিল। রতনদার কথায় হুঁশ ফেরে।
আরে তোকে বলার আগে গুরু আমাকে ধরেছিল।আমি তোর নামটা সুপারিশ করি। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানলাম এই ব্যাপার।জানি তুই এ পথ দিয়ে যাবি তাই ---
যাকগে ওসব,শোন কাজ আছে করে ফেল অনেক টাকা পাবি।
কি কাজ, কতটাকা?
সে তোকে ভাবতে হবে না এই যে শিশিটা দিচ্ছি
কিসের শিশি
ওষুধের,তুই শুধু গোবিন্দ নস্করের বাড়ি ঢুকে টেবিল থেকে আসল শিশিটা নিয়ে এই শিশিটা রেখে আসবি।তোর কাছে এই কাজ নস্যি।
কি আছে ঐ শিশিতে?না আমি পারবনা।
আসলে নস্কর বাবু উঠতি নেতা , খুব পরোপকারী। ওকে খুব সাহায্য করে।সে বুঝতে পারে ঐ শিশিতে বিষ আছে। পথের কাঁটা সরাবার ব্যবস্থা।
তুই পারবিনা তাহলে।
না, তুমি নিজেই করনা। ছোটখাটো চোর, মানুষ হত্যা পারবনা।
ঠিক আছে।
গরম ভাতের গন্ধটা আর শিবুর ভালো লাগছেনা।সে পথে নেবে আসে। রতনদার কাজের প্রকৃতি সে বুঝতে পারে। ভালো লাগলো না।এই কাজ তার দ্বারা হবে না।
রতনের ফোনটা বেজে ওঠে।
না রাজি হলনা শিবু
সে কি রে তবে তো বিপদ,ঠিক আছে আমি দেখছি।
পরদিন তেঁতুল তলায় শিবুর নলি কাটা দেহটা আবিষ্কার করে ভোরের কৃষকরা।শিবুর বৌ শিবুর অপেক্ষায় থেকে ঘুমিয়ে পড়েছে। পান্তা ভাত তেমনি ঢাকা দেওয়া।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন