বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা
রুদ্র কিংশুক
স্ভেতানকা এলেনকোভা-র কবিতা
স্ভেতানকা এলেনকোভা (Tsvetanka Elenkova, 1968)-র জন্ম বুলগেরিয়ার সোফিয়াতে তাঁর মৌলিক কবিতা সংকলনের সংখ্যা সাতের অধিক এবং অনূদিত কবিতা সংকলনের সংখ্যা প্রায় তিরিশের কাছাকাছি। ভারতীয় সংস্কৃতির তিনি একজন অনুরাগী পাঠক ।
তিনি পড়েছেন ধম্মপদ, গীতা এবং রবীন্দ্রনাথ। শিব ও শৈড়তন্ত্র নিয়ে লেখা দক্ষিণ ভারতের প্রাচীন মরমিয়া কবি রচনা তিনি অনুবাদ করেছেন বুলগেরিয় ভাষায়। কবিতা লেখা, অনুবাদ, পত্রিকা-সম্পাদনা এবং প্রকাশনা----কবিতাকেন্দ্রিক বহুকবি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এই কবি সাম্প্রতিক বুলগেরিয়ো কবিতায় একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব
১. সাপ
শ্লীলতাখুন
প্রবৃত্তির অভাবের
কেবল সাধারণ অজ্ঞতার
পাপবোধহীনতার
সরলতার
গলার
প্রথম ও শেষ গিঁট
চোখের প্রবেশদ্বারের ঠিক পাশেই
(চোখের ভেতর দিয়ে নয় )
অনেকগুলো চোখ
পিনকুশনে আটকানো
প্রথমে চেষ্টা করো আঙুলে
তারপর নখ দিয়ে
পাতলা বা ভারী কিছু নিয়ে
উদাহরণস্বরূপ পেনসিল বলা যায়
তুমি গেঁথে দাও এর ভেতর
বেশ কয়েকবার আগুপিছু
শৃংখল সবচেয়ে কঠিন
অথবা সেন্ট জর্জ এর ঘোড়ার লেজ
যতক্ষণ না এটা আলাদা হয়
তারপর তুমি খুলে রাখো ফিতে
ফেলে দাও মেঝের ওপর
অথবা তোমার জুতোর ভেতর
যদি তুমি পরিশ্রমি হও
প্রবেশের
প্রবেশের হও
প্রবেশের জন্য প্রস্তুত
২. ক্যাকটাস
যেখানে মনে হয়
সে ওপরে উঠছে উঠছে
সে আসলে নিচে নেমে যায়
এতটাই লাল
পুরোপুরি ঝলমলে
যেন জমাট বাঁধা রক্ত
অথবা আগুন কাচের
পিছনে
তাকে দেখায় গোল
কিন্তু কাছে গেলে চতুর্ভুজাকার
আর মাঝখানে কোথাও ছ
একটা ছোট ছোট সাদা পাথর-ভরা বাগান
এবং একটা গর্ত হাতের তালু দিয়ে গড়া
পশ্চিমী পোতাশ্রয়ে পালতোলা নৌকার মাঝে ৷
৩. মৃত্যু
একটা কামড়
তোমার আঙুল হারানোর
পর
৪. নার্সিসাসের কাহিনী
প্রত্যেক সন্ধ্যায় সে মেয়েটির জন্য জানালায় অপেক্ষা করে। কিন্তু সে কেবল নিজেকে দেখেই চলে যায় ।একদিন সে ঠিক করে অপেক্ষার শেষ দেখে ছাড়বে এবং তারপর অপেক্ষা বন্ধ করে। জলের ওপর ঝুঁকে পড়ে সে নাকানি-চোবানি খায় এবং সাঁতার কাটতে শুরু করে। মানুষের মতো মাথা ওপরে তুলে নয় কিন্তু মাছের মতো। ডলফিন বা তিমির মতো বাতাসের জন্য দু-একবার সে ওপরে উঠে তারপর ডুবে যায় চিরতরে ।আয়নার ভেতর খোলা চোখ নিয়ে।বাকিরা শিখে চলে বিবর্তনের কথা --- কীভাবে জীবেরা জল থেকে উঠে এল ডাঙ্গায়। বাকিরা করে চলে ব্যাখ্যা নার্সিসাসের কাহিনী।
৫. স্বাধীনতার ক্ষত
কেউ কেউ কুকুরের জন্য কেনে কুকুরের জন্য কেনে নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের চামড়া-বন্ধনী। অন্যেরা পছন্দ করে রিল সহ স্বয়ংক্রিয় বন্ধনী। তুমি কুকুরকে ইচ্ছে মতো দৌড়াতে দৌড়াতে দাও কিন্তু তুমি জানো কখন তাকে টেনে আনবে। আমি আমারটাকে ছেড়ে দিই । কিন্তু দু-তিনবার সে দৌড়ে পালিয়ে ছিল এবং ফিরে এসেছিল ক্ষত নিয়ে। তাই এখন আমি তাকে ছেড়ে দিই কেবলমাত্র আমার উঠানে। আমার কুকুরটা কাঠবেড়ালির দিকে এবং সন্ধ্যাবেলায় চাঁদের দিকে তাকিয়ে ঘেউ ঘেউ করে। এবং যখন আমরা বেড়ার কাছেই জ্বালানি কাঠ জড়ো করি, সে তার ওপর উঠে লাফায়।আবার সে ফিরে আসে ক্ষত নিয়ে তার পর আমি সিদ্ধান্ত নিই তাকে শেকলে বেঁধে রাখার । কারণ আমার কুকুরকে ক্ষত থেকে থেকে ক্ষত থেকে মুক্ত রাখতে হবে।
রুদ্র কিংশুক
স্ভেতানকা এলেনকোভা-র কবিতা
স্ভেতানকা এলেনকোভা (Tsvetanka Elenkova, 1968)-র জন্ম বুলগেরিয়ার সোফিয়াতে তাঁর মৌলিক কবিতা সংকলনের সংখ্যা সাতের অধিক এবং অনূদিত কবিতা সংকলনের সংখ্যা প্রায় তিরিশের কাছাকাছি। ভারতীয় সংস্কৃতির তিনি একজন অনুরাগী পাঠক ।
তিনি পড়েছেন ধম্মপদ, গীতা এবং রবীন্দ্রনাথ। শিব ও শৈড়তন্ত্র নিয়ে লেখা দক্ষিণ ভারতের প্রাচীন মরমিয়া কবি রচনা তিনি অনুবাদ করেছেন বুলগেরিয় ভাষায়। কবিতা লেখা, অনুবাদ, পত্রিকা-সম্পাদনা এবং প্রকাশনা----কবিতাকেন্দ্রিক বহুকবি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এই কবি সাম্প্রতিক বুলগেরিয়ো কবিতায় একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব
১. সাপ
শ্লীলতাখুন
প্রবৃত্তির অভাবের
কেবল সাধারণ অজ্ঞতার
পাপবোধহীনতার
সরলতার
গলার
প্রথম ও শেষ গিঁট
চোখের প্রবেশদ্বারের ঠিক পাশেই
(চোখের ভেতর দিয়ে নয় )
অনেকগুলো চোখ
পিনকুশনে আটকানো
প্রথমে চেষ্টা করো আঙুলে
তারপর নখ দিয়ে
পাতলা বা ভারী কিছু নিয়ে
উদাহরণস্বরূপ পেনসিল বলা যায়
তুমি গেঁথে দাও এর ভেতর
বেশ কয়েকবার আগুপিছু
শৃংখল সবচেয়ে কঠিন
অথবা সেন্ট জর্জ এর ঘোড়ার লেজ
যতক্ষণ না এটা আলাদা হয়
তারপর তুমি খুলে রাখো ফিতে
ফেলে দাও মেঝের ওপর
অথবা তোমার জুতোর ভেতর
যদি তুমি পরিশ্রমি হও
প্রবেশের
প্রবেশের হও
প্রবেশের জন্য প্রস্তুত
২. ক্যাকটাস
যেখানে মনে হয়
সে ওপরে উঠছে উঠছে
সে আসলে নিচে নেমে যায়
এতটাই লাল
পুরোপুরি ঝলমলে
যেন জমাট বাঁধা রক্ত
অথবা আগুন কাচের
পিছনে
তাকে দেখায় গোল
কিন্তু কাছে গেলে চতুর্ভুজাকার
আর মাঝখানে কোথাও ছ
একটা ছোট ছোট সাদা পাথর-ভরা বাগান
এবং একটা গর্ত হাতের তালু দিয়ে গড়া
পশ্চিমী পোতাশ্রয়ে পালতোলা নৌকার মাঝে ৷
৩. মৃত্যু
একটা কামড়
তোমার আঙুল হারানোর
পর
৪. নার্সিসাসের কাহিনী
প্রত্যেক সন্ধ্যায় সে মেয়েটির জন্য জানালায় অপেক্ষা করে। কিন্তু সে কেবল নিজেকে দেখেই চলে যায় ।একদিন সে ঠিক করে অপেক্ষার শেষ দেখে ছাড়বে এবং তারপর অপেক্ষা বন্ধ করে। জলের ওপর ঝুঁকে পড়ে সে নাকানি-চোবানি খায় এবং সাঁতার কাটতে শুরু করে। মানুষের মতো মাথা ওপরে তুলে নয় কিন্তু মাছের মতো। ডলফিন বা তিমির মতো বাতাসের জন্য দু-একবার সে ওপরে উঠে তারপর ডুবে যায় চিরতরে ।আয়নার ভেতর খোলা চোখ নিয়ে।বাকিরা শিখে চলে বিবর্তনের কথা --- কীভাবে জীবেরা জল থেকে উঠে এল ডাঙ্গায়। বাকিরা করে চলে ব্যাখ্যা নার্সিসাসের কাহিনী।
৫. স্বাধীনতার ক্ষত
কেউ কেউ কুকুরের জন্য কেনে কুকুরের জন্য কেনে নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের চামড়া-বন্ধনী। অন্যেরা পছন্দ করে রিল সহ স্বয়ংক্রিয় বন্ধনী। তুমি কুকুরকে ইচ্ছে মতো দৌড়াতে দৌড়াতে দাও কিন্তু তুমি জানো কখন তাকে টেনে আনবে। আমি আমারটাকে ছেড়ে দিই । কিন্তু দু-তিনবার সে দৌড়ে পালিয়ে ছিল এবং ফিরে এসেছিল ক্ষত নিয়ে। তাই এখন আমি তাকে ছেড়ে দিই কেবলমাত্র আমার উঠানে। আমার কুকুরটা কাঠবেড়ালির দিকে এবং সন্ধ্যাবেলায় চাঁদের দিকে তাকিয়ে ঘেউ ঘেউ করে। এবং যখন আমরা বেড়ার কাছেই জ্বালানি কাঠ জড়ো করি, সে তার ওপর উঠে লাফায়।আবার সে ফিরে আসে ক্ষত নিয়ে তার পর আমি সিদ্ধান্ত নিই তাকে শেকলে বেঁধে রাখার । কারণ আমার কুকুরকে ক্ষত থেকে থেকে ক্ষত থেকে মুক্ত রাখতে হবে।
দুর্দান্ত কবিতা
উত্তরমুছুন