বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা
রুদ্র কিংশুক
আকসিনিয়া মিহাইলোভা- র কবিতা
আকসিনিয়া মিহাইলোভা (Aksinia Mihaylova, 1963) জন্মেছেন বুলগেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে। সোফিয়ার সেন্ট ক্লিমেন্ট ওহবিডস্কি ইউনিভার্সিটিতে
তিনি দর্শনের পাঠ নিয়েছেন। আহ্ মারিয়া (Ah Maria) নামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সাহিত্য পত্রিকার তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। নিজের মৌলিক বুলগেরিয়ান কবিতার একাধিক সংকলন ছাড়াও প্রায় ত্রিশটি অনুবাদ কবিতার সংকলন প্রস্তুত করেছেন তিনি। লিথুয়ানিয়ান, লাটভিয়ান এবং ফরাসি কবিতার তিনি একজন উল্লেখযোগ্য অনুবাদক।
১. বৃষ্টি
আধঘন্টা ধরে আমি সাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে
তবুও ধুয়ে ফেলতে পারছি না বহু বছরের তাড়া- করে- আসা স্বপ্নকে
যে স্বপ্নে তুমি আমাকে ছেড়ে যাচ্ছ
কৃষি বাজারে
দক্ষিণের এক শহরে ।
রক্তের জোয়ার ঝেরে ফেলছে
বালি এবং মৃত জেলিমাছ আমার চোখে
আর আমি দেখতে পাচ্ছি না কী করে তুমি চলে যাও দূরে
তোমার কাঁধের ওপর ঝুঁকে পড়া
কোনো একজনের আনন্দ বয়ে নিয়ে
এপ্রিল খুলে দেয় ব্যালকনি
তথাপি আমার ভেতরের বেড়াল জেগে ওঠেনা
টানা পাঁচ মাস :
গরম টিন-ছাদ,
রৌদ্রল টালি-ছাদ
অন্য ঋতুর দৃশ্য।
ডুমুর গাছের তলায় আমি গর্ত খুঁড়ি,
তালুর মধ্যে পিষে ফেলি আকাশমনি- বীজ,
আমি অচেনা ভাষায় কথা বলি তাদের সঙ্গে
কিন্তু তবু বৃষ্টি আসে না
আর তুমি কিছুতেই বুঝতে চাওনা
আমাকে তোমার কতটা ভালোবাসা প্রয়োজন।
আমার মাথার ওপর মেঘ ঝুলে থাকে
প্রতিশ্রুতির মতো।
২. নিষ্পাপ
প্রথমবার আমি নেমে এসেছিলাম,
জোনাকিদের ধীর অগ্রসরের আগে
না-কাটা বার্লি ক্ষেতের ওপর,
শিরদাঁড়া বরাবর আঙ্গুলের আগে
ঘুমের ভাঙ্গা ডানা বাঁধা
নিজেকে শেখানোর আগে।
আমি চেয়েছিলাম আরেকটা শরীর
দুজন একসাথে খাওয়াব বলে,
কিন্তু কেউ ডাকেনি আমার নাম।
দ্বিতীয় বার আমি নেমে এসেছিলাম,
তখন আমি শিখে গেছি ছোট্ট ছোট্ট আনন্দের বর্ণমালা,
যদিও জ্ঞানবৃক্ষের ওপর ডালিম
তখনও কাঁচা, অসীমের উপভোগের পক্ষে,
আমরা প্রেমিক-প্রেমিকার মতো ধীর নদীর ভেতরে ঢুকলাম
আর ভাইবোন হিসেবে উদ্বেলিত:
তোমার এবং আমার ভেতর---- আলো।
৩. কিছুটা ইতস্তততার পর
আমি জেগে উঠি
হাসি পরিহিত
যা নেমে আসে আমার হাঁটু অবধি
আমি এটা পড়েই কি পার্কে যাব
সতেজ হাওয়া খেতে
অন্তত সন্ধ্যা পর্যন্ত টিকে থাকতে
অথবা আমি তাদের
রেঁধে ফেলবো সবজি ঝোলে
ভঙ্গুর পারিবারিক সাম্যের কারণে
বাইরে যাবার আগে
আমি আয়নার দিকে তাকাতে সাহস করি না।
৪. যেহেতু আমি জানিনা হাত দিয়ে কী করবো
যেহেতু আমি জানিনা হাত দিয়ে কী করবো,
আমি ডুমুর ঝুড়ি দোমরাই মোচরায়
যখন সে আনন্দ-বাগিচা থেকে দূরে যায়
বোতাম দিয়ে বন্ধ করে শেষ সূর্যালোক
কন্ঠনালী পর্যন্ত ।
কাল সে ডেস্কের সবচেয়ে নিচের ড্রয়ারে
রেখে দেবে আরও একটা জলরং ছবি
জীবন বদলানোর অভিপ্রায়ে
সে ঝেড়ে ফেলে শরীর থেকে আমার হাসি যেভাবে
মৌমাছিরা মুছে ফেলে পায়ে- লাগা বাবলা-রেণু
আর সে ফিরবে মুর্তি-ভরা গলিপথে
যারা তাদের মাথার ওপর ছরিয়ে রেখেছে আকাশের পরিবর্তে
পান্ডুলিপি।
রুদ্র কিংশুক
আকসিনিয়া মিহাইলোভা- র কবিতা
আকসিনিয়া মিহাইলোভা (Aksinia Mihaylova, 1963) জন্মেছেন বুলগেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে। সোফিয়ার সেন্ট ক্লিমেন্ট ওহবিডস্কি ইউনিভার্সিটিতে
তিনি দর্শনের পাঠ নিয়েছেন। আহ্ মারিয়া (Ah Maria) নামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সাহিত্য পত্রিকার তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। নিজের মৌলিক বুলগেরিয়ান কবিতার একাধিক সংকলন ছাড়াও প্রায় ত্রিশটি অনুবাদ কবিতার সংকলন প্রস্তুত করেছেন তিনি। লিথুয়ানিয়ান, লাটভিয়ান এবং ফরাসি কবিতার তিনি একজন উল্লেখযোগ্য অনুবাদক।
১. বৃষ্টি
আধঘন্টা ধরে আমি সাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে
তবুও ধুয়ে ফেলতে পারছি না বহু বছরের তাড়া- করে- আসা স্বপ্নকে
যে স্বপ্নে তুমি আমাকে ছেড়ে যাচ্ছ
কৃষি বাজারে
দক্ষিণের এক শহরে ।
রক্তের জোয়ার ঝেরে ফেলছে
বালি এবং মৃত জেলিমাছ আমার চোখে
আর আমি দেখতে পাচ্ছি না কী করে তুমি চলে যাও দূরে
তোমার কাঁধের ওপর ঝুঁকে পড়া
কোনো একজনের আনন্দ বয়ে নিয়ে
এপ্রিল খুলে দেয় ব্যালকনি
তথাপি আমার ভেতরের বেড়াল জেগে ওঠেনা
টানা পাঁচ মাস :
গরম টিন-ছাদ,
রৌদ্রল টালি-ছাদ
অন্য ঋতুর দৃশ্য।
ডুমুর গাছের তলায় আমি গর্ত খুঁড়ি,
তালুর মধ্যে পিষে ফেলি আকাশমনি- বীজ,
আমি অচেনা ভাষায় কথা বলি তাদের সঙ্গে
কিন্তু তবু বৃষ্টি আসে না
আর তুমি কিছুতেই বুঝতে চাওনা
আমাকে তোমার কতটা ভালোবাসা প্রয়োজন।
আমার মাথার ওপর মেঘ ঝুলে থাকে
প্রতিশ্রুতির মতো।
২. নিষ্পাপ
প্রথমবার আমি নেমে এসেছিলাম,
জোনাকিদের ধীর অগ্রসরের আগে
না-কাটা বার্লি ক্ষেতের ওপর,
শিরদাঁড়া বরাবর আঙ্গুলের আগে
ঘুমের ভাঙ্গা ডানা বাঁধা
নিজেকে শেখানোর আগে।
আমি চেয়েছিলাম আরেকটা শরীর
দুজন একসাথে খাওয়াব বলে,
কিন্তু কেউ ডাকেনি আমার নাম।
দ্বিতীয় বার আমি নেমে এসেছিলাম,
তখন আমি শিখে গেছি ছোট্ট ছোট্ট আনন্দের বর্ণমালা,
যদিও জ্ঞানবৃক্ষের ওপর ডালিম
তখনও কাঁচা, অসীমের উপভোগের পক্ষে,
আমরা প্রেমিক-প্রেমিকার মতো ধীর নদীর ভেতরে ঢুকলাম
আর ভাইবোন হিসেবে উদ্বেলিত:
তোমার এবং আমার ভেতর---- আলো।
৩. কিছুটা ইতস্তততার পর
আমি জেগে উঠি
হাসি পরিহিত
যা নেমে আসে আমার হাঁটু অবধি
আমি এটা পড়েই কি পার্কে যাব
সতেজ হাওয়া খেতে
অন্তত সন্ধ্যা পর্যন্ত টিকে থাকতে
অথবা আমি তাদের
রেঁধে ফেলবো সবজি ঝোলে
ভঙ্গুর পারিবারিক সাম্যের কারণে
বাইরে যাবার আগে
আমি আয়নার দিকে তাকাতে সাহস করি না।
৪. যেহেতু আমি জানিনা হাত দিয়ে কী করবো
যেহেতু আমি জানিনা হাত দিয়ে কী করবো,
আমি ডুমুর ঝুড়ি দোমরাই মোচরায়
যখন সে আনন্দ-বাগিচা থেকে দূরে যায়
বোতাম দিয়ে বন্ধ করে শেষ সূর্যালোক
কন্ঠনালী পর্যন্ত ।
কাল সে ডেস্কের সবচেয়ে নিচের ড্রয়ারে
রেখে দেবে আরও একটা জলরং ছবি
জীবন বদলানোর অভিপ্রায়ে
সে ঝেড়ে ফেলে শরীর থেকে আমার হাসি যেভাবে
মৌমাছিরা মুছে ফেলে পায়ে- লাগা বাবলা-রেণু
আর সে ফিরবে মুর্তি-ভরা গলিপথে
যারা তাদের মাথার ওপর ছরিয়ে রেখেছে আকাশের পরিবর্তে
পান্ডুলিপি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন