বিশ্বদুনিয়ার নতুন কবিতা
রুদ্র কিংশুক
জুন ইর- এর কবিতা
১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে জুন ইর (Jun Er, 1968)-এর জন্ম। চিন জুড়ে তখন চলছে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের উন্মাদনা। তার বিকল্প ধারার অধীন ছিল তরুণ কবিদের লেখা।
অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ঝলমলে আলোর নিচে যে গভীর অন্ধকার লুকিয়ে থাকে তারই লুকিয়ে থাকে তারই তথ্যনিষ্ঠ উন্মোচন ঘটেছে এ প্রজন্মের তরুণ কবি জুন ইর-এর কবিতায়। চীনের অর্থনৈতিক বিপ্লব চিনা মানুষের আত্মিক মৃত্যুকে নিশ্চিত করেছে। জীবনের এই বিপ্রতীপ অবস্থানের বাচন জুন ইর-এর কবিতা।
১. রেফারেন্স
আমার বিপরীতে: রাস্তা, বাড়িঘর ,হাউজিং, এস্টেট, কয়েকটা বাড়ি
আমার বিপরীতে: ঘাসজমি, গাছপালা, পথচারী
আমার বিপরীতে: আত্মা ও জানালা
আমি অন্য জগতে, অন্য শহর ,অন্য ঘর
আমি পাশ থেকে দেখছি,
এই জগতের জীবন প্রবাহে পুরোপুরি অংশগ্রহণে অসমর্থ
কাজকর্মে আমি অর্ধেক মানুষ
তোমাদের কাছে আমি খাবার খাই যা আমাকে বাঁচতে সাহায্য করে
আমার অন্য অর্ধেক ভাসমান মেঘ, গ্রীষ্মকালীন ফুল
হেমন্তের পাতা, পৃথিবীর হ্রদসমূহ
নদী-নালা যা সমুদ্রগামী
টিলা, ঘাসজমি ,বিস্তীর্ণ আদিম বন,
রাতের বাতাস, সকালের বাষ্প, অতর্কিত বাষ্প
দূরবর্তী স্থান, অব্যবহৃত রেলট্রাক, ভুতুড়ে শহর
মরুভূমি, শীতঘুম, একটা বীজ ধুলোয় আহূত
অদৃশ্য
২. এক পয়সার মুদ্রা
আমার ডেস্ক -এর এক কোনে একটা এক পয়সার মুদ্রা
একাকী
হাবিজাবি কাগজের টুকরোর ভেতর
কখনো কখনো আমি ড্রয়ার খুলে
খোঁজাখুঁজি করি
এবং আবার বন্ধ করি
মুদ্রাটির অস্তিত্ব নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবনা চিন্তা ছাড়াই
আজ কর্মহীন একটি মুহূর্তে
আমি আবার আবিষ্কার করলাম এক পয়সার মুদ্রা স্বাধীনতা
তার সংযম, শান্তি আর শব্দহীনতা
মানুষের জীবনের সঙ্গে কোনো মিল আছে কি?
যদিও তারা কখনো বলেনি
এই মুদ্রাগুলি একদা ছিল, তা সত্বেও
৩. সাগর মানিক
এই সাগরজল আকাশের চেয়ে বেশি নীল:
আমি যদি এর ভেতর শব্দ খুঁজে পেতাম,
আমি নিশ্চিত তারা বলত সাগর আশা ছেড়েছে,
সে চায়না আরো গভীরে গিয়ে তার আবেগের
বেহিসেবি খরচ
শুধু কি লবন যা তুমি তুমি লবন যা তুমি তুমি যা তুমি গ্রহণ করেছ করেছ, বর্জন করেছ,
কোমলতার সঙ্গে? প্রতিটি কণা
তোমার তিক্ততার ভেতর ক্রিস্টাল ?
শুধু কি সূর্যালোক যা জড়ো করেছে
ছড়ানো-ছিটানো সবকিছু?
এই জীবনের ভেতর যেতে যেতে আমি দেখি
তোমার স্বচ্ছতা, তোমার শুদ্ধতা আমার কাছে অতর্কিত
আমি এসব দেখে মুহূর্তে হতচকিত
শব্দ খুঁজে পাইনা
৪. জার
আজ একটা বড়ো জার সরালাম
জারটা আচারের আনাজপাতি রাখার,
ঝুল বারান্দা থেকে আমার পড়ার ঘরে
এই গাঢ় লাল পাত্রটা
একটু মোটা দাগের নির্মাণ
পেট মোটা
আর সারা গায় গর্ত ভরা
এর ঢাকনাটা ছোটো গোলাকার
আমি জানিনা এটা দিয়ে কী করব
মেঝের উপর দাঁড়ানো, প্রতিফলিত আলো
শান্ত আর মোটা,
এখন, ঢাকনা খুললে
ঘরের সব বাতাস এর ভেতর ঢুকে যাবে
রুদ্র কিংশুক
জুন ইর- এর কবিতা
১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে জুন ইর (Jun Er, 1968)-এর জন্ম। চিন জুড়ে তখন চলছে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের উন্মাদনা। তার বিকল্প ধারার অধীন ছিল তরুণ কবিদের লেখা।
অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ঝলমলে আলোর নিচে যে গভীর অন্ধকার লুকিয়ে থাকে তারই লুকিয়ে থাকে তারই তথ্যনিষ্ঠ উন্মোচন ঘটেছে এ প্রজন্মের তরুণ কবি জুন ইর-এর কবিতায়। চীনের অর্থনৈতিক বিপ্লব চিনা মানুষের আত্মিক মৃত্যুকে নিশ্চিত করেছে। জীবনের এই বিপ্রতীপ অবস্থানের বাচন জুন ইর-এর কবিতা।
১. রেফারেন্স
আমার বিপরীতে: রাস্তা, বাড়িঘর ,হাউজিং, এস্টেট, কয়েকটা বাড়ি
আমার বিপরীতে: ঘাসজমি, গাছপালা, পথচারী
আমার বিপরীতে: আত্মা ও জানালা
আমি অন্য জগতে, অন্য শহর ,অন্য ঘর
আমি পাশ থেকে দেখছি,
এই জগতের জীবন প্রবাহে পুরোপুরি অংশগ্রহণে অসমর্থ
কাজকর্মে আমি অর্ধেক মানুষ
তোমাদের কাছে আমি খাবার খাই যা আমাকে বাঁচতে সাহায্য করে
আমার অন্য অর্ধেক ভাসমান মেঘ, গ্রীষ্মকালীন ফুল
হেমন্তের পাতা, পৃথিবীর হ্রদসমূহ
নদী-নালা যা সমুদ্রগামী
টিলা, ঘাসজমি ,বিস্তীর্ণ আদিম বন,
রাতের বাতাস, সকালের বাষ্প, অতর্কিত বাষ্প
দূরবর্তী স্থান, অব্যবহৃত রেলট্রাক, ভুতুড়ে শহর
মরুভূমি, শীতঘুম, একটা বীজ ধুলোয় আহূত
অদৃশ্য
২. এক পয়সার মুদ্রা
আমার ডেস্ক -এর এক কোনে একটা এক পয়সার মুদ্রা
একাকী
হাবিজাবি কাগজের টুকরোর ভেতর
কখনো কখনো আমি ড্রয়ার খুলে
খোঁজাখুঁজি করি
এবং আবার বন্ধ করি
মুদ্রাটির অস্তিত্ব নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবনা চিন্তা ছাড়াই
আজ কর্মহীন একটি মুহূর্তে
আমি আবার আবিষ্কার করলাম এক পয়সার মুদ্রা স্বাধীনতা
তার সংযম, শান্তি আর শব্দহীনতা
মানুষের জীবনের সঙ্গে কোনো মিল আছে কি?
যদিও তারা কখনো বলেনি
এই মুদ্রাগুলি একদা ছিল, তা সত্বেও
৩. সাগর মানিক
এই সাগরজল আকাশের চেয়ে বেশি নীল:
আমি যদি এর ভেতর শব্দ খুঁজে পেতাম,
আমি নিশ্চিত তারা বলত সাগর আশা ছেড়েছে,
সে চায়না আরো গভীরে গিয়ে তার আবেগের
বেহিসেবি খরচ
শুধু কি লবন যা তুমি তুমি লবন যা তুমি তুমি যা তুমি গ্রহণ করেছ করেছ, বর্জন করেছ,
কোমলতার সঙ্গে? প্রতিটি কণা
তোমার তিক্ততার ভেতর ক্রিস্টাল ?
শুধু কি সূর্যালোক যা জড়ো করেছে
ছড়ানো-ছিটানো সবকিছু?
এই জীবনের ভেতর যেতে যেতে আমি দেখি
তোমার স্বচ্ছতা, তোমার শুদ্ধতা আমার কাছে অতর্কিত
আমি এসব দেখে মুহূর্তে হতচকিত
শব্দ খুঁজে পাইনা
৪. জার
আজ একটা বড়ো জার সরালাম
জারটা আচারের আনাজপাতি রাখার,
ঝুল বারান্দা থেকে আমার পড়ার ঘরে
এই গাঢ় লাল পাত্রটা
একটু মোটা দাগের নির্মাণ
পেট মোটা
আর সারা গায় গর্ত ভরা
এর ঢাকনাটা ছোটো গোলাকার
আমি জানিনা এটা দিয়ে কী করব
মেঝের উপর দাঁড়ানো, প্রতিফলিত আলো
শান্ত আর মোটা,
এখন, ঢাকনা খুললে
ঘরের সব বাতাস এর ভেতর ঢুকে যাবে
খুব সুন্দর, অনন্য চিন্তার পারফিউমে ভরা।
উত্তরমুছুন