পত্রিকা "দহগ্রাস"
বাংলা সাহিত্যে চিরকালই অতিচালাকি ছিলো।কিন্তু, সাময়িকী-কে প্রশ্রয় দিলে ~ একটা স্ট্যান্ড পয়েন্ট এসে পৌঁছাই আমরা।যারা এই সময়কে ধরতে পারছেন না, বলছেন "আঙুরফল টক"।অর্থাৎ, দুর্বোধ্য / অশ্লীল / জটিল, ইত্যাদি ভৌত প্রবচন আমদানি করে ~ বাংলা সাহিত্যের ব্যক্তিগত মালিকানা ও দখলদারিকে কায়েম রাখতে চাইছেন।অতীতেও এসব ছিলো।অতীতেও এসব আমদানির কাউন্টার রিঅ্যাকশন্ ছিলো ~ কখনো দায়িত্ব নিয়ে, কখনো স্রেফ খেয়ালে।বেদ / গীতা / চর্যাপদ / কালিদাস /পয়ার / চন্ডিদাস / মাইকেল / রবীন্দ্রনাথ / জীবনানন্দ / বিনয় / হাংরি / শ্রুতি : ইত্যাদি কতো চাই।এই কাউন্টারকরণের জায়গাটি যেন আবহমান কালের।স্বপ্রকাশের কথা বা স্বআবিষ্কার, যা এই ডিজিটাল সময়ের চরমতম শ্লোগান, আরো উস্কে দিচ্ছে কাউন্টার রিঅ্যাকশন্।যেমন : 'দহগ্রাস' পত্রিকার উদ্বোধনী সংখ্যাটি ~ যার প্রচ্ছদেই রয়েছে "কাব্যমার্গ ঢালাইয়ের কবিতা ডোজার" কথাটি।১১জন কবির কবিতায় সমৃদ্ধ সংখ্যা ~ যেন একটি টিম : যারা কবিতার বুলডোজার চালিয়ে কাব্যমুক্তি পুনর্দখলের দাবি জানাচ্ছে
প্রথমেই মলয় রায়চৌধুরী ওপেন করছেন ~ মলয়দাস বাউলের দেহতত্ত্ব (বানানটি যদিও দেহতত্ব আছে)।বর্তমান মধ্যবিত্ত দোগলাপন (দোদুল্যমানতা) : ঘটছে ডোমনী থেকে সাম্রাজ্যবাদের সাফোকেশন্।২য় গোড়াপত্তনকারী হলেন অনুপম মুখোপাধ্যায় ~ রমণডাঙা কবিতাগুচ্ছ নিয়ে।৩য় কবি চয়ন দাশ, বর্ধমানে বাড়ি, প্রমিসিং : কারন, কবিতা নিয়ে প্রচুর প্রশ্ন ও দ্বন্দ্ব, তার ভিতর প্রতিনিয়ত।শিরোনাম ~ আরেকটা উত্তল সাঁকোর কবিতা।তার যাপন নিয়ে, নির্ভয়ে তুলছেন অমোঘ বিদ্যুৎের মতো প্রশ্নচিহ্ন।যেনো নিজেকে পুড়িয়ে শুদ্ধতার পরিসর।মৌমিতা মিত্র (চিনতাম না।কিন্তু ইচ্ছে করে, কারন : লেখনীটি খাসা ও সৎ) ~ সোফিয়া লিখেছেন।শুরুতেই রয়েছে, সোফিয়া লরেন নয়, সোফিয়া রোবোটকে নিয়ে।দলদাস, আনুগত্যের পূর্বশর্ত।যান্ত্রিকতার দলদাস হয়ে ওঠা মানুষেরা, যদি ঘুম ভাঙে।পরবর্তী মিডল্ অর্ডার : সুব্রত ঘোষ ~ বিপ্লবী কবিতা নিয়ে।কবির কবিতা নিয়ে আলোচনা করি, এটা এই অধমের কাছে দুঃসাধ্য।তবে, "যৌথ স্বর্গগুলো খোদাই আছে হরি মুদির দোকানে / - রামকিঙ্কর বেইজ টু, ছ্যাকরাগাড়ির রেজোলিউশন" ~ কবিতাটির এটুকুই যথেষ্ট।এবারে দেখা যায়, কৌস্তুভ গাঙ্গু্লীর কবিতা ~ প্রত্ন অর্গান।খননে অভিষিক্ত হোক নবীন শুদ্ধতা, শুদ্ধ সময়।অ্যাডভারটাইজমেন্টে বলা আচ্ছে দিন নয়।"বাস্তুকার পিরামিডকে উল্টে দিলে / আমি এক চতুর্থাংশ দ্বার প্রত্ন খুঁড়েছি" ~ এক অমোঘ সত্যের কথা।এরপর যেন, উইকেটরক্ষক - ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় শুভ আঢ্য, এই সময়ের গুরুত্বপূর্ণ কবি।লিখেছেন ~ অযৌন জনন, কবিতা এবং কিছু অসংলগ্নতা।শক্তি নিত্য, কিন্তু অনিত্য শক্তির প্রয়োগ।শুভ-র দীর্ঘ কবিতায়, কথাটি বড়ো ধারাবাহিক।এবারে যাঁরা আসছেন ~ টেইলএন্ডার নন্, আমরা বলবো বোলার (বোদ্ধারা বলেন : প্রকৃত ম্যাচ উইনার্স)।যেমন, শানু চৌধুরী ~ রুস্তম & সদকা।দুটি কবিতাতেই মনে হয়, অনায়াসে ১৫০ কি.মি. / প্রতি ঘন্টা ~ "ভাঙাঘড়ির স্বর কেটে তুলে নেওয়া / জলের গজল / এইতো তোমার কানন!"।এরপর, রাহুল গাঙ্গুলী ~ মানে এই লেখক : ২টি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক কবিতায়।তারপর, মণিদীপা সেন : ২টি কবিতায় ~ ননসেন্স & একটি পাওয়ার কাট এবং....। "ঋতুমতী হওয়ার আগের কিছুদিন শিবলিঙ্গকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় লাগে কথাটা ভেঙে দেখলেই শিখে নেওয়া সহজ যে চিরসত্যের উক্তি পরিবর্তনে সময়ের কাল"।শেষের কবি শুভম চক্রবর্তী ~ আদিম বিবর গন্ধ।এক বিশেষ দিনকালের সূর্যছায়া যেন।"তোমাকে তুমুল করার পর / চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ি, জানলা খোলা থাকে"
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন