আটপৌরে ৭১৭ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 717 by Sudip Biswas
আটপৌরে ৭১৭
তক্ষক
অখ্যাত। গবেষণা। সম্পাদ্য।
বিরক্তিকর
আহ্লাদের যোগানদার যথেষ্ট ধৈর্য।
আটপৌরে ৭১৭ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 717 by Sudip Biswas
আটপৌরে ৭১৭
তক্ষক
অখ্যাত। গবেষণা। সম্পাদ্য।
বিরক্তিকর
আহ্লাদের যোগানদার যথেষ্ট ধৈর্য।
শব্দব্রাউজ- ১০৮৮ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1088, Nilanjan Kumar
শব্দব্রাউজ- ১০৮৮ ।। নীলাঞ্জন কুমার
বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা থেকে ১২.৩.২৪. দুপুর দুটো।
শব্দসূত্র: নেই হাহাকার বিন্দু
হাহাকার মন
চোখ রাঙিয়ে
দমিয়ে রাখা যায় না,
দেখো
সে যেন
মন ছুঁতে না পারে।
হাহাকারের জন্য
সময় থাকে না-
উদয়াস্ত কবিতাআবীর
মেখে থাকলে ।
সূচনা সংস্থার বসন্ত উৎসব । সংস্কৃতি সংবাদ
৩ এপ্রিল, কলকাতা ।। আবীর রঙে রাঙিয়ে অত্যন্ত জমজমাট বসন্ত উৎসবের আয়োজন করেছিল সূচনা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ কলকাতার শিয়ালদহের কৃষ্ণচন্দ্র মেমোরিয়াল হলে ।
উৎসব মঞ্চে প্রথম পর্বে উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে কবি বিশ্বরূপ মুখোপাধ্যায়, সভাপতি কবি কমল দে সিকদার , প্রধান অতিথি কবি সাংবাদিক সাকিল আহমেদ , বিশেষ অতিথি হিসেবে কবি প্রাবন্ধিক
নীলাঞ্জন কুমার ও কবি প্রভাস মজুমদার । উক্ত গুণীজন সূচনা পত্রিকার বসন্ত সংখ্যার আবরণ উন্মোচন করেন ।স্বাগত ভাষনে সূচনা পত্রিকা ও সংস্থার সম্পাদক কবি ও বাচিক শিল্পী নিপা চক্রবর্তী এই সংস্থার উদ্দেশ্য ও আদর্শ ব্যাখ্যা করেন।
নিটোল এই অনুষ্ঠানে কবিতা গান বক্তব্যে অংশ নেন উক্ত গুণীজন ছাড়াও তাপস সাহা , পিনাকী বসু,কাজল চক্রবর্তী, বরুণ চক্রবর্তী, মানস মুখোপাধ্যায়, সব্যসাচী মল্লিক, নিপা চক্রবর্তী, মৃণাল কান্তি সাহা সহ সংস্থার অন্যান্য সদস্য সদস্যগণ ।
ত্রুটিহীন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কবি তপতী চট্টোপাধ্যায়, মানস মুখোপাধ্যায় , নিপা চক্রবর্তী । পরিপূ্র্ণ সভাঘরে সংস্থার সমৃদ্ধি কামনা করেন উপস্থিত শ্রোতৃমন্ডলী।
আটপৌরে ৭১৬ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 716 by Sudip Biswas
আটপৌরে ৭১৬
ফুল
যে। ফুল।ফোটেনি।
এপ্রিলে
তাকে ফাঁকি দিয়েছো নিজেই।
শব্দব্রাউজ- ১০৮৭ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1087, Nilanjan Kumar
শব্দব্রাউজ- ১০৮৭ ।। নীলাঞ্জন কুমার
বিপাশা আবাসন ।তেঘরিয়া মেন রোড । কলকাতা থেকে ১১. ৩. ২৪. সকাল ১০টা ৫৫ মিনিট ।
শব্দসূত্র : মেঘ সঙ্গী মনে
মেঘ জীবন পেলে
মেঘ বাড়িতে বাসা বেঁধে
চাঁদ পালকি চেপে
ট্যুরিস্ট হয়ে ব্রহ্মান্ডে ....
মেঘ সঙ্গী মনে
তখন অবাক প্রেম ...
মেঘ স্বপ্নে ঢালে আবির
মেঘ প্রেমিকা ......
আটপৌরে ৭১৫ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 715 by Sudip Biswas
আটপৌরে ৭১৪
ভাব
পরজন্মে। ব্রিজ। হবো।
এজন্মে
অলীক সেতুবন্ধ সাধ্যের বাহিরেই।
শব্দব্রাউজ- ১০৮৬ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1086, Nilanjan Kumar
শব্দব্রাউজ- ১০৮৬ ।। নীলাঞ্জন কুমার
বিপাশা আবাসন ।তেঘরিয়া মেন রোড । কলকাতা থেকে ১১. ৩. ২৪. সকাল ১০টা ৫৫ মিনিট ।
শব্দসূত্র : মেঘ সঙ্গী মনে
মেঘ জীবন পেলে
মেঘ বাড়িতে বাসা বেঁধে
চাঁদ পালকি চেপে
ট্যুরিস্ট হয়ে ব্রহ্মান্ডে ....
মেঘ সঙ্গী মনে
তখন অবাক প্রেম ...
মেঘ স্বপ্নে ঢালে আবির
মেঘ প্রেমিকা ......
রম্যরচনা
"... বান্ধবী ললিতা..."
কাশীনাথ সাহা
আমাদের ব্যথা একজায়গায় নয়।নানান জায়গায় ব্যথা চড়বড়িয়ে উঠেছে। বাঙালির প্রেমে ব্যথা, বিরহে ব্যথা,প্রতিবেশীতে ব্যথা,নালিশে ব্যথা!পুলিশে ব্যথা,হেলমেট না থাকলেই দু'হাজার। চাকরিতে ব্যথা,নিয়োগে ব্যথা, ডি.এ তে ব্যথা।বউয়ে ব্যথা, পরকীয়ায় ব্যথা!আরও আরও গোপন অনেক ব্যথা আছে বাঙালিদের সেগুলো উল্লেখ করা সমীচীন নয়। বাঙালি এখন প্রেমে পড়তেও ভয় পাচ্ছে! প্রেমে তো পড়বো। তারপর? প্রেমিকা যখন বিয়ের বায়না ধরবে তখন কি হবে! চাকরির অবস্থা তো তথৈবচ! চাকরি বিহীন প্রেম চলে বিবাহ চলে না। অতএব, ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না। ইদানিং সন্দেশখালি -র ব্যথাটাও বেশ চনমনিয়ে উঠেছে। বেশ তো গটগটিয়ে চলছিল রাজ্যটা। দু'চারটা নেতা-মন্ত্রীরা জেলে ঢুকলেও বাকীরা আগামী ভোটে জিতবেই জিতবে নিশ্চিন্ত হয়ে দখিনা বাতাস খাচ্ছিল। দিদিমণি ও লক্ষ্মী ভান্ডার ৫০০ থেকে হাজার। ডি এ আরও ফোর পার্সেন্ট। ব্যস বাঙালির আর কি চাই৷ সবই লাইন বরাবর চলছিল, কিন্তু কোথা থেকে বেআক্কেল ভাবে সন্দেশখালি ঢুকে সব গড়বড় করে দিল। এ ব্যথা কি যে ব্যথা বোঝে কি আনজনে সজনি আমি বুঝি মরেছি মনে মনে.... । বলা নেই কওয়া নেই এক্কেবারে সর্বাঙ্গে ব্যথা ধরিয়ে দিয়েছে সন্দেশখালি! লক্ষ্মীর ভান্ডারের ফায়দা এক্কেবারে মাঠে মারা গেল! কেন্দ্র সরকারও ঝোপ বুঝে কোপ মারতে ময়দানে নেমে পড়েছে। ইতনা সুনহারা মওকা কঁহা মিলে গা! বাম আর কংগ্রেসীরা এখনও ধরি মাছ না ছুঁই পানি... । কি করবে কোন পথে লড়াইটা চালাবে বুঝতে পারছে না। এটা হলো I.N.D.I.A জোটের ব্যথা! পথে এবার নামো সাথী পথেই হবে ব্যথা চেনা...!কিন্তু পথ কোথায়? এখন পেট ব্যথা,মাথা ব্যথা,হাঁটুতে ব্যথা,দাঁতে ব্যথা কোমরে ব্যথার মতো অন্য শাশ্বত ব্যথা গুলো আর ঠিক টের পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ কেউ তো আবার ব্যথা বাড়িয়ে দিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসনের সাইনবোর্ড সামনে ঝুলিয়ে দিয়েছে। কবিদেরও ব্যথা টনটনিয়ে উঠেছে! কবিদের কলম তো আগেই বেশ চড়া দামে বিক্রি হয়েই গেছে। অনেক শ্রী, উপাধি, উত্তরীয়, স্মারক আর মঞ্চে একটা নড়বড়ে চেয়ারের লোভে কবি আর কবিতার মেরুদণ্ড বেঁকেই গেছে। দু একজন যাঁরা এখনোও কবিতায় একটু আলতো উষ্ণতা ছড়াবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারাও সচেতন।মেপে পা ফেলছে। পরের ব্যথা আঙুল টিপতে গিয়ে নিজেই না গাড্ডায় পড়ে! বুদ্ধিজীবীরা পথে নামবো নামবো করেও মোমবাতির অভাবে পথে নামতে পারছেন না। নামলেই ব্যথা... দুয়ারে ব্যথা!সংগীত শিল্পীরা গলা ছেড়ে গান গাইছে, তুমি অনেক যত্ন করে আমায় ব্যথা(দুঃখ) দিতে চেয়েছো দিতে পারো নি।যদি বলি আমিও তো ডুবেছি তুমিও কি একটুও ডুবোনি...
ঘরের বউ বলে দিয়েছে, ওসব সন্দেশখালি না সন্দেশভর্তি তা জেনে তোমার লাভ নেই। ও বিষয় নিয়ে একটাও উচ্চবাচ্য চলবে না। মনে রেখো লক্ষ্মী ভান্ডার একহাজার হো গয়া! এখন আমরা সবাই লক্ষ্মীশ্রী!কিছু ব্যাগড়বাই করেছো কি পিটিয়ে বৃন্দাবন দেখিয়ে দেব! অতএব কোন কোন জায়গায় ব্যথা তা এখন নিজেই বুঝতে পারছি না।
এদিকে দুদিন বাদেই ২১ শে ফেব্রুয়ারি। আন্তর্জাতিক স্বাধীনতা না কি একটা দিবস! ভাষা দিবস কি? ওটা আবার কি দিবস? ভ্যালেন্টাইন্স দিবসের মতোই কি? কি হবে ওইদিন? একটু সাজুগুজু। একটু কবিতা গান বক্তৃতা নেকু নেকু মিছিলে, আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি...। একটা দুটো পত্রিকা প্রকাশ! সেই পত্রিকায় যার কবিতা ছাপা হয় সেই কবি নিজের কবিতাটি বার দশেক পড়ে বইটি তাকে তুলে রাখে। উইকে খাওয়ানোর জন্য! এ ব্যথা বাঙালির নতুন ব্যথা! স্যরি ব্যথা না হুজুগ! চলুক এসব নিয়েই আমরা বেঁচেবর্তে থাকতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মমতা, মোদি,মা মাটি মানুষ, জয় শ্রীরাম,ইনকিলাব, বন্দেমাতরম, ভারতমাতা কি জয়।সবকিছুতে জড়িয়ে ব্যথা ভর্তি শরীর নিয়ে ভুবনেশ্বর এইমস্ নয়তো ভেলোর,চেন্নাই ছুটছি। ছুটেই চলেছি...,
আর মাঝে দেশাত্মবোধক সঙ্গীতের সাথে তাল মেলাচ্ছি... তোর কোন কোন জায়গায় ব্যথা গো বান্ধবী ললিতা!
শব্দব্রাউজ- ১০৮৫ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1085, Nilanjan Kumar
শব্দব্রাউজ- ১০৮৫ ।। নীলাঞ্জন কুমার
বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা থেকে ৩.৩.২৪. বিকাল তিনটে দশ।
শব্দসূত্র: তোলপাড় মনের সামনে দাঁড়িয়ে
তোলপাড় হচ্ছি মনে মনে
তার সামনে দা়ঁড়িয়ে
বুঝে নিচ্ছি নিজের ভাবগতিক।
বেখেয়াল মনে ঝিকিয়ে ওঠে
শব্দ ।
তোলপাড মনের সামনে দাঁড়িয়ে
যে আজন্ম।
আটপৌরে ৭১৪ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 714 by Sudip Biswas
আটপৌরে ৭১৪
বিপাক
ক্রিয়াপদ।অনুবাদ। ক্রমাগত।
বিদীপ্ত
নবকল্লোল ঢেউ তুলছে অবিরাম।
শব্দব্রাউজ- ১০৮৪ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1084, Nilanjan Kumar
শব্দব্রাউজ- ১০৮৪ ।। নীলাঞ্জন কুমার
বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড থেকে ২৮.২.২৪. সকাল দশটা পনের ।
শব্দসূত্র : লুকোচুরি শব্দের সঙ্গে
লুকোচুরি অক্ষরের সঙ্গে
লুকোচুরি শব্দের সঙ্গে
লুকোচুরি কথার সঙ্গে
তাতে অভিমান হয় ঝগড়া হয়
রাগ করে ফাগ ফেলি পথে
তবু ছুটে আসি তার কাছে।
এই জীবন এইভাবে
হেসে খেলে কাটিয়ে
এই বেশ।
তার রেশ থেকে যাক
কবিতায়
সুর মুর্ছনায়
গাঢ় কল্পনায়।
আটপৌরে ৭১৩ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 713 by Sudip Biswas
আটপৌরে ৭১৩
এণাক্ষ
হজরত। শাহজালাল। বিজ্ঞান।
রূপান্তর
চেয়ে দেখছেন পথের উড়ান।
রম্যরচনা
ভোট প্রার্থী
কাশীনাথ সাহা
ভোটের দামামা বাজবো বাজবো করছে, সেই সময়ই বিছুটি দলের নেতারা এসে ধরলো, দাদা আপনাকে দাঁড়াতে হবে। আমি খাটিয়ায় বসে ছিলাম, সোজন্যতা বশতঃ উঠে দাঁড়ালাম। বললাম, দাঁড়িয়েছি, বলুন কি বলবেন! নেতা বললো, আরে দাদা ও দাঁড়ানো নয়, এবার নির্বাচনে আমাদের বিছুটি দলের হয়ে আপনাকে ভোটে দাঁড়াতে হবে। আমাকে ভোটে?আমার ভোটে দাঁড়ানোর যোগ্যতা কি আছে যে আমার কথা আপনাদের মাথায় এলো? না মানে, ওই যে আপনি কবিতা লিখেন! তো? ওটাই যোগ্যতা, অন্য সব দল ডাক্তার, উকিল,বিচারক, অভিনেতা, অভিনেত্রী, ফুটবলার, ক্রিকেটার সবাইকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আমরা নতুন কিছু খুঁজছিলাম। আপনার মতো কবি টবি জাতীয় নতুন কিছু। আমার কবিতা আপনারা পড়েছেন? পাশ থেকে একজন বলে উঠলো, পড়েছি কিছু ই বুঝতে পারিনি। খুব দুর্বোধ্য। সেই জন্যই মনে হলো আপনি একজন বড় মাপের কবি, যাঁর কবিতা সহজে বোঝা যায় না। আমার যোগ্যতার মাপকাঠিটা বুঝতে পেরে শিহরিত হলাম! অগত্যা সকলের ধরাধরিতে বিছুটি দলের হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে গেলাম। পরদিন সকালে মা কালীর মন্দিরে, দুপুরে মসজিদে, বিকেলে চার্জে,সন্ধ্যায় গুরদোয়ারায় শ্রদ্ধা নিবেদন করে ময়দানে দেড় প্যাঁচ মেরে দিলাম। প্রথম দিন প্রচারে বের হচ্ছি, বউ থালায় গোটা কয়েক বিছুটি পাতা এনে বলল,তুমি বিছুটি দলের হয়ে ভোটে লড়ছো, কপালে নিজে থেকে একটু বিছুটি পাতা ঘসে প্রথম দিনের প্রচারটা শুরু করে দাও। আমি আশীর্বাদ করছি তুমি জিতবেই জিতবে! আমি অবাক হয়ে বললাম, সেকী, আমি স্বামী, গুরুজন হই তোমার, তুমি আমাকে আশীর্বাদ করছো মানে! মাথাটা গেছে না-কি?বউ গুরুজন মার্কা একটা হাসি ঝেড়ে বললো, না আমার মাথা খারাপ হয়নি, দিদিমণি লক্ষ্মীর ভান্ডার দিচ্ছে না, তাহলে আমরা হলাম,মা লক্ষ্মী স্বরূপা। মাতৃসমা। বুঝতে পারলে? পারলাম। কপালে আলতো করে বিছুটি পাতার ছোঁয়া নিয়ে অপপ্রচারে বেরিয়ে পড়লাম। সাথে দু'দশটা সমর্থক। আমার ইলেকশন এজেন্ট একজন দক্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তি। লাল সবুজ, গেরুয়া হলুদ সব দল পাল্টে এখন বিছুটি দলের ব্লক সভাপতি। তিনি কানে কানে বলে দিলেন, হাতটা সবসময়ই জোড় করে রাখবেন, প্রণাম করা ছাড়া খুলবেন না। হাসি মুখে হাত জোড় করে হাঁটতে লাগলাম। যেতে যেতে যাকে সামনে পাচ্ছি তারই পায়ের ধুলো মাথায় ঠেকাচ্ছি। ছোট বড় কাউকেই বাদ দিচ্ছি না। দেখলাম সকলেই হাসি মুখে প্রণাম গ্রহণও করে নিচ্ছে। কারও কোন মায়া দয়া নেই। এক জায়গায় একটা বউ তার বাচ্চা শিশুটিকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। আমি বউটিকে প্রণাম করে বাচ্চাটাকেও প্রণাম করতে যাচ্ছিলাম, পাশ থেকে একজন বলে উঠলো কোলে কোলে! ইচ্ছে থাকলেও পরস্ত্রীকে কোলে নেওয়াটা কি ঠিক হবে! বিশেষত এই জনসমক্ষে! কিন্তু কিন্তু করে জিজ্ঞেস করলাম, পরের বউ, কোলে নেব কি? পাশ থেকে আওয়াজ এলো, আরে বউকে নয় বাচ্চাটাকে কোলে নিন। ও তাই বলো,কলগেট হাসি ঝরিয়ে বাচ্চাটাকে কোলে তুললাম, পাশ থেকে সমর্থকরা পটাপট কয়েকটা ফটো তুলে নিল। পাবলিক নাকি, এইসব ভালো খায়! ইতিমধ্যে আনন্দে নয়তো ভয়ে শিশুটি নতুন পাঞ্জাবি পেয়ে একটু জলত্যাগ করে দিল। হাসি মুখে সেটাও মানতে হলো। যতো বিরক্তিকর লাগুক না কেন, মুখ থেকে হাসি মোছা চলবে না। কিছুদূর যেতেই মাঠ থেকে একজন দৌড়ে এসে জাপটে ধরলো।মাঠে কাজ করছিল ধুলো কাদায় মাখামাখি শরীর। নিয়ম মতো আমিও জড়িয়ে ধরলাম। ভোট বড়ো বালাই। জামাটার দফারফা। দুপুরে এক জায়গায় খাওয়ার আয়োজন ছিল। দেখলাম আমার পাশাপাশি হাঁটতে থাকা নেতা সমর্থকদের জন্য, মাছ ভাজা,মুরগী মাংসের ঝোল আরও গোটা কয়েক তরকারি। আমি যেহেতু ভোটে দাঁড়িয়েছি, সেজন্য আমার জন্য পান্তা, পেঁয়াজ, কাঁচা লংকা, শাক ভাজা। আমি কেমন সাধারণ জীবনযাপন করি সেটা বোঝানোই নাকি মূল উদ্দেশ্য। সেই পান্তা যখন খাচ্ছি, তখনও ছবি তুলতে লাগলো কয়েকজন, একটা টি ভির সাংবাদিক ক্যামেরা তাক করে আমার খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমার মুখে সাঁটিয়ে রাখলো। দুপুরে খাওয়ার পরে কয়েকজন আমার সমর্থক বললো, দাদা ছ'ঘন্টা হয়ে গেছে। আমাদের বিলটা দিয়ে দিন,সাতজন আছি প্রত্যেকের পাঁচশো করে সাড়ে তিন হাজার। বিকেলে আবার অন্য দলের হয়ে প্রচারে বের হতে হবে। বুঝলাম। অবাধ গনতন্ত্র একেই বলে। টাকা নিয়ে ওরা চলে গেল।
বিকেলে পুনরায় প্রচারের জন্য বের হওয়ার আগে আমার নির্বাচনী এজেন্ট অভিসন্ধি বাবু বললেন, দাদা আপনার মুখটা বড্ড ধূর্ত টাইপের। মানে পাবলিক সিমপ্যাথি আদায়ের জন্য যেমন মুখ ভোটে লাগে ঠিক তেমনটি আপনার মুখ নয়। সে তো আমিও জানি, বউ তো আমাকে ধূর্ত, বদমাশ, পাজির পা ঝাড়া এসব
শব্দ দিনে দশবার বলে!কিন্তু কিন্তু করে বললাম, কিন্তু আমার মুখটাকে তো আমি পাল্টাতে পারবো না। এই মুখ টাকেই যখন নির্বাচন করেছেন তখন একে দিয়েই কাজ চালিয়ে নিন। অভিসন্ধি বাবু কিছুক্ষণ চিন্তা করে বললেন, একটা ছোট্ট ইনজুরি মুখে হয়ে গেলে ওটা হয়ে যাবে। ইনজুরি মানে? কাটাকাটি করবেন না-কি? সামান্য। আমার পাটির ছেলেদের বলে দেব মাথায় একটু হাতুড়ি দিয়ে ঠুকে দেবে। চোখের ঠিক উপরে। দেখবেন একটু কেটে গিয়ে চোখ মুখটা সামান্য ফুলে গেলে পাবলিক সিমপ্যাথি বেড়ে যাবে। সামান্য লাগবে, কিন্তু ভোট যুদ্ধে সেটুকু তো মেনে নিতে হবে। ওটা কাল পরশু করে দেব।মন্টাকে বলে দেব, খুব শান্তিপ্রিয় ছেলে, ওই পারবে।সদাকে বললে ও আবার ছোরা ছুরি বা বোমা বন্দুক ছাড়া কিছু বিশ্বাস করে না। সেটা একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে আপনার মতো কবি মানুষের পক্ষে।...
প্রচারে বেরিয়ে ভোটারদের নানান আবদার শুনতে হচ্ছে। জমিজমার সমস্যা, চাকরি চাই, এসব তো আছেই, একজন এসে বললো, দাদা আমার বউ একমাস হলো রাগ করে বাপের বাড়ি চলে গেছে। আমি আনতে গেলেও আসছে না, আপনি দাদা পাটির লোক ( ভাগ্য ভালো যে পটি-র লোক বলেনি!) একটু বুঝিয়ে সুঝিয়ে এনে দিন। কথা দিচ্ছি বউ ফিরে এলে দু'জনেই আপনার দলকে কলকে চিহ্নে ভোট দেব। আর একজন এসে অভিযোগ জানালো, দাদা আমরা মদ খাই বলে কি মানুষ নই! সরকার পেট্রোল ডিজেল গ্যাসের দাম কমালো, লক্ষ্মী ভান্ডারে টাকা বাড়িয়ে দিল, আমাদের সামান্য নেশার জিনিস মদের দামটা একটুও কমালো না। এটা সরকারের বিমাতৃসুলভ আচরণ নয়? অভিসন্ধি বাবু বলে দিয়েছেন, সকলকেই সন্তুষ্ট করতে হবে। পারিব না একথাটি মুখে উচ্চারণ করা, নৈব নৈব চ। সকলকেই প্রতিশ্রুতি দিলাম। সকলের সব সমস্যার সমাধান করে দেব। মদের দাম শুধু কমাবো না,আমাদের দল ক্ষমতায় এলে সপ্তাহে দু'দিন মদ ফ্রী করবোই করবো। এই কয়েকদিনের মধ্যে মিথ্যা কথাটা বেশ রপ্ত করে ফেলেছি। আগে যেমন কলম ধরলে কবিতা বের হতো, এখন মুখ খুললেই প্রতিশ্রুতি গলগল বের হচ্ছে। সেদিন একটা জনসভায় মহিলাদের প্রতিশ্রুতি দিলাম, যে সমস্ত মহিলা বিধবা ভাতা পাচ্ছেন না বলে দুঃখ পাচ্ছেন, তাঁদের জানাচ্ছি এবার থেকে আপনারা বিধবা না হলেও বিধবা হওয়ার আবেদন করলেই দু হাজার টাকা করে বিধবা ভাতা পাবেন। বলার সাথে সাথে যা হাততালি পড়লো তাতেই বুঝতে পারছি, আমার জয় আটকাবার ক্ষমতা কোনও মাঈ কী লালের নেই। আমি জিতবোই জিতবো...
সেদিন প্রচার সেরে বাড়ি ফিরতেই বউ আদুরে গলায় বললো, তুমি না খুব ভালো, তোমার মতো লোক হয় না, শোন না, ওই বিধবা ভাতার টাকাটা দু’হাজার টাকা নয় ওটা পাঁচ হাজার করে দিও। তাতে আমারও একটু সাশ্রয় হবে। তবে তোমাকে ছুঁয়ে কথা দিচ্ছি, আমি কিন্তু সরকারকে ঠকাবো না, বিধবা না হয়ে কিছুতেই ওই বিধবা ভাতা-র টাকা স্পর্শ করবো না।
শেষ
বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন
হোমেন বরগোহাঞি
মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ– বাসুদেব দাস
এক
বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের জীবন কাহিনি বলতে শুরু করার আগে আমি কীভাবে তাকে আবিষ্কার করলাম সে কথা প্রথমে বলে নিতে চাই।
প্রায় অর্ধশতক আগের কথা। আমি তখন গ্রামের মিডল স্কুলের ছাত্র। সেই সময় আমাদের স্কুলের প্রধান উৎসব ছিল দুটি একটি হল সরস্বতী পুজো অপরটি বাৎসরিক পুরস্কার বিতরণী সভা। এই দুটি উৎসবের মধ্যে সরস্বতী পুজোর পরিবেশ ছিল বেশি আনন্দময় কারণ এই উৎসবে স্কুলের সমস্ত ছাত্রই সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে পারত। অন্যদিকে পুরস্কার বিতরণী সভা আনন্দ বহন করে আনত শুধুমাত্র নির্বাচিত কিছু ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য– যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী সারা বছর মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করে পরীক্ষায় প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় স্থান অধিকার করে পুরস্কার পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। আমি সরস্বতী পূজা খুব ভালোবাসতাম। তার প্রধান কারণ ছিল দুটি। বলা বাহুল্য যে প্রথম কারণটি ছিল পুজোর প্রসাদ হিসেবে বিশুদ্ধ মোষের দুধ এবং জুহা চাল দিয়ে তৈরি করা সুস্বাদু পায়েশ খাওয়ার লোভ। জুহা চালে এমনিতেই সুন্দর গন্ধ থাকে।পায়েসের সুগন্ধ বাড়ানোর জন্য তাতে আবার সামান্য কর্পূর দেওয়া হত।বসন্তের মৃদু বাতাস পায়েসের সুগন্ধ চারপাশে ছড়িয়ে দিয়ে সমগ্র গ্রামে একটা মন মাতাল করা উৎসবের পরিবেশ সৃষ্টি করত।কিন্তু সুস্বাদু পায়েস খাওয়ার লোভের চেয়ে দ্বিতীয় যে কারণটার জন্য আমি সরস্বতী পুজো ভালোবাসতাম সেটা ছিল পায়েস দেবার জন্য ব্যবহার করা শালপাতার খোঁজে গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে থাকা ঘন অরণ্যটা তন্ন তন্ন করে খোঁজার সুযোগ।এই কাজের ভার পড়েছিল স্কুলের উঁচু শ্রেণির বয়সে বড়ো অর্থাৎ নয় দশ বছরের ছেলেদের ওপরে।শালপাতা খোঁজার অজুহাতে আমরা জঙ্গলটার একটুও জায়গা বাদ না দিয়ে সমগ্র জঙ্গলটা তন্ন তন্ন করে খুঁজেছিলাম।আর সেটা করতে গিয়ে একটা রোমাঞ্চকর অভিযানের অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলাম।জঙ্গলটাতে এভাবে ঘুরে বেড়ানোর সময় বিচিত্র গাছ-লতা,পশু-পাখি এবং কীট পতঙ্গের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হওয়ার সুযোগ লাভ করেছিলাম।সেইসবের মধুর স্মৃতি আজও আমার জীবন আনন্দময় করে রেখেছে।
সরস্বতী পুজো খুব ভালোবাসতাম যদিও সত্যি কথা বলতে গেলে আমার কাছে সরস্বতী পুজোর চেয়েও বাৎসরিক পুরস্কার বিতরণী সভার আকর্ষণ ছিল তীব্র।আমি শ্রেণিতে সবসময় প্রথম বা দ্বিতীয় হতাম এবং তার ফলে বাৎসরিক পুরস্কার পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছিলাম।স্কুলের প্রায় দুশো ছাত্রের মধ্যে পুরস্কার পাওয়া ছাত্রের সংখ্যা ছিল স্বাভাবিকভাবেই অত্যন্ত কম।মাত্র আঠারো কুড়ি জন।স্কুলের হেডপণ্ডিত পুরস্কার পাওয়া ছাত্রের নাম ঘোষণা করে তাকে পুরস্কার গ্রহণ করার জন্য ডাকার সঙ্গে সঙ্গে সে যখন বসা থেকে উঠে দাঁড়ায় ,তখন গৌরব এবং আনন্দে তাঁর ছোট্ট বুকটা গর্বে ফুলে উঠে। পুরস্কার হিসেবে পাওয়া বইগুলি অমূল্য সম্পদের মতো দুইহাতে বুকে জড়িয়ে ধরে সে যখন নিজের আসনে ফিরে আসে,তখন শত শত জোড়া চোখ ঈর্ষা এবং প্রশংংসার সঙ্গে তাকে অনুসরণ করে।অন্তত কয়েকটি মুহূর্তের জন্য সে পুরস্কার হিসেবে লাভ করা বইগুলি থেকে বেশি লোভনীয় যেন অনুভব করে সহপাঠী-বন্ধুদের এই ঈর্ষা-কাতর এবং প্রশংসাপূর্ণ দৃষ্টিকে।যেহেতু বাৎসরিক পুরস্কার পাওয়া ছাত্রদের ভেতরে আমিও ছিলাম অন্যতম,তাই গৌ্রব এবং আনন্দের এই মুহূর্তগুলি বারবার ফিরে পাওয়ার লোভে আমি সারাটা বছর উন্মুখ হয়ে পথ চেয়ে থাকতাম।
ব্যক্তি এবং সমাজের উন্নতির জন্য দুটো জিনিস সমান প্রয়োজন বলে বিবেচনা করা হয়।একটি হল প্রতিযোগিতা,অন্যটি সহযোগিতা।প্রতিযোগিতা মানুষকে নিজের প্রতিভা এবং বুদ্ধি-বৃত্তির বিকাশের জন্য প্রেরণা দান করে;সেভাবে বিকশিত হওয়া প্রতিভাকে সমাজের বৃহত্তর কল্যাণের জন্য নিয়োগ করাটা সম্ভব হয় সহযোগিতার মাধ্যমে।তাই একটু গভীরভাবে ভাবলেই দেখা যায় যে ব্যক্তি এবং সমষ্টি উভয়ের উন্নতি এবং কল্যাণের জন্য প্রতিযোগিতা এবং সহযোগিতা দুটিই অপরিহার্য।
প্রতিযোগিতার মাদকতা পাঠশালার ছাত্র অবস্থায় যতটা তীব্রভাবে অনুভব করা যায়,জীবনের অন্য কোনো সময়েই সেভাবে করা যায় না।স্কুলের ভালো ছাত্র (এবং ছাত্রী)কয়েকজন শ্রেণিতে নিজের শীর্ষস্থান রক্ষা করার জন্য অখণ্ড মনোযোগের সঙ্গে অধ্যয়ন করার সময় প্রতি মুহূর্তে অনুভব করে সুস্থ প্রতিযোগিতার এই তীব্র মাদকতা।কিছুদিন আগে আমি জনপ্রিয় ইংরেজ লেখক জেফ্রে আর্চারের দি প্রডিগেল ডটার (The Prodigal Daughter) নামে একটি উপন্যাস পড়েছিলাম।উপন্যাসের একটি অধ্যায়ে একজন নয়-দশ বছরের মেয়ে একজন সহপাঠী ছেলেকে শ্রেণিতে প্রথম হওয়ার প্রতিযোগিতায় পরাস্ত করার জন্য দৃঢ়সংকল্প নিয়ে কঠোর সাধনায় নিমগ্ন হওয়ার বর্ণনা আছে।সেই অধ্যায়টি পড়ার সময় আমি নিজের দূর অতীতের পাঠশালার দিনগুলিতে ফিরে গিয়েছিলাম এবং আমি মেয়েটি অনুভব করা প্রতিযোগিতার মধুর মাদকতাটুকু নিজে অনুভব করেছিলাম। আমার মনে হয় যে যে সমস্ত ছাত্র ছাত্রী প্রতিযোগিতার মঙ্গলজনক অভিজ্ঞতার স্বাদ জীবনে একবারও উপভোগ করে নি তাঁরা একটি মূল্যবান জিনিস হারিয়েছে।অবশ্য প্রতিযোগিতা কেবল যে শ্রেণিতে প্রথম-দ্বিতীয় হওয়ার জন্যই হওয়া উচিত এরকম কোনো কথা নয়।খেলা-ধুলা,ব্যায়াম,সঙ্গীত,সাহিত্য-চর্চা এবং এমনকি সমাজ-সেবার ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করার জন্য প্রতিযোগিতা হতে পারে।আমি গ্রামের যে সরকারি মিডল স্কুলে পড়াশোনা করতাম সেই স্কুলে সহজ স্বভাব-চরিত্র এবং আচরণের জন্যও বাৎসরিক পুরস্কার দেবার ব্যবস্থা ছিল।
আমাদের শৈশবে অসমিয়া বই পত্রের সংখ্যা এখনকার তুলনায় অনেক কম ছিল।পুরস্কার দেবার জন্য যে সমস্ত বই বাছা হত সেইসব ছিল প্রধানত মহৎ লোকের জীবন চরিত,রামায়ণ-মহাভারত-ইলিয়াদ আদি মহাকাব্যের সংক্ষিপ্ত কাহিনি এবং ছেলে- মেয়েদের চরিত্র গঠনে সাহায্যকারী বই।সেই সময় অসমিয়া বইপত্রের সংখ্যা খুবই কম ছিল বলে আমরা বছরে পুরস্কার পাওয়া ছেলেরা প্রায় একই বই পুরস্কার হিসেবে বছরের পরে বছর পেতাম।আমি পুরস্কার হিসেবে পাওয়া কয়েকটি বইয়ের নাম এখনও মনে আছে।মহাদেব শর্মা লেখা ‘মহম্মদ চরিত’পেয়েছিলাম পাঁচটি।অম্বিকাপ্রসাদ গোস্বামীর লেখা ‘চরিত্র গঠন’ এবং ‘ইলিয়াদ’ও প্রায় সমান সংখ্যকই পেয়েছিলাম।‘মৌ-মহাভারত’,ধ্রুব,বুদ্ধদেব ইত্যাদি কয়েকটি বইয়ের কথাও মনে আছে।বছরের পর বছর একই বই পুরস্কার হিসেবে পেয়ে আর পড়ে একঘেয়েমি লাগছিল।ঠিক তখনই কোনো একটি বছরে ‘বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন’ নামের একটি বই পুরস্কার হিসেবে পেলাম,তারমধ্যে আবার বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন নামটা আমার কাছে একেবারে নতুন।আমরা বই পড়তে ভালোবাসা ছেলেরা সেইসময় গো-গ্রাসে বই গিলতাম,অর্থাৎ একটা নতুন বই হাতে পড়লেই অন্য সমস্ত কাজ-কর্ম এবং চিন্তা-ভাবনা একপাশে রেখে দিয়ে বইটা দ্রুত শেষ করতে চেষ্টা করতাম।আমি আগে পড়া অন্য সমস্ত বই থেকে বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন আমার মনকে বেশি করে গ্রাস করেছিল,কারণ বইটির বিষয়বস্তু ছিল আমার কাছে একেবারে নতুন।বইটি পড়ে আমি যখন শেষ করলাম,তখন আমি অনুভব করলাম যে আমার জীবনে এই বইটির প্রভাব হবে চিরস্থায়ী।সেই তখন থেকেই আমি মনে এরকম একটি সঙ্কল্প পুষে রেখেছিলাম যে বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের বিষয়ে লেখা যতগুলি বই এবং প্রবন্ধ সংগ্রহ করতে পারি সেই সমস্ত বই পড়ব এবং সম্ভব হলে আমিও তাঁর একটা জীবনী লিখব।এই জীবনীটা লিখে আমি দীর্ঘকাল ধরে মনের মধ্যে পুষে রাখা সেই সঙ্কল্প পূরণ করতে পেরেছি।কিন্তু বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের বিষয়ে লেখা অনেক বই পত্র পড়েছি বলে আমি দাবি করতে পারি না,কারণ অসমে বসবাস করে বইপত্র জোগাড় করা একটি অতি কঠিন কাজ।উদাহরণস্বরূপ কার্ল ভান দোরেন লেখা যে বইটিকে বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের সর্বশ্রেষ্ঠ জীবন-চরিত বলে বলা হয়ে থাকে সেই বইটা আমার এখনও পড়ার সুযোগ হয় নি।তথাপি তাঁর বিষয়ে লেখা যতগুলি বই এবং প্রবন্ধ পড়েছি সেগুলি তাঁর মহত্ত্ব উপলদ্ধি করার জন্য যথেষ্ট।তাছাড়া তাঁর আত্ম-জীবনীটাও আমি পড়েছি।অবশ্য আত্মজীবনীটা তিনি সম্পূর্ণ করে যেতে পারেন নি।অর্ধ সমাপ্ত অবস্থায় সেটি প্রকাশ করা হয়েছে।
লেখক পরিচিতি-১৯৩২ সনে লখিমপুর জেলার ঢকুয়াখনায় হোমেন বরগোহাঞির জন্ম হয়। ১৯৫৪ সনে কটন কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যের স্নাতক। সাময়িকভাবে সরকারি চাকরি করে সাহিত্যচর্চা এবং পরবর্তীকালে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। ‘নীলাচল’, ‘জনক্রান্তি’, ‘নাগরিক’,’অসম বাণী’ইত্যাদি কাগজের সম্পাদনা করেন। ‘পিতাপুত্র’ উপন্যাসের জন্য ১৯৭৭ সনে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। ‘আত্মানুসন্ধান’,‘বিভিন্ন নরক’,‘সুবালা’, ‘মৎস্য গন্ধা’, ‘সাউদর পুতেকে নাও মেলি যায়’ লেখকের অন্যতম গ্রন্থ। লেখকের ছোটো গল্প উপন্যাস প্রবন্ধ এবং আত্মজীবনী মূলক রচনা অসমিয়া সাহিত্যকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করে তুলেছে। ১২ মে ২০২১ সনে এই মহান লেখকের মৃত্যু হয়।
আটপৌরে ৭১২ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 712 by Sudip Biswas
আটপৌরে ৭১২
রসাতল
রটনাক্লান্ত।প্রগলভতা। অজস্র।
কুড়িগ্রাম
সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় বিশুদ্ধ।
শব্দব্রাউজ- ১০৮৩ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1083, Nilanjan Kumar
শব্দব্রাউজ- ১০৮৩ ।। নীলাঞ্জন কুমার
বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা থেকে ২৭.২.২৪.সকাল দশটা দশ।
শব্দসূত্র: মেতে থাকি লীলাখেলায়
শব্দের সঙ্গে প্রতি মুহূর্ত
মেতে থাকলে লীলাখেলায় ,
বাড়তি অক্সিজেন
আমার সঙ্গে থাকে ।
গভীর অগভীর শব্দ নিয়ে
খেলতে খেলতে
নিজেকে আবিষ্কার করি ।
শব্দের সঙ্গে খেলতে খেলতে
আরো বাঁচার লোভ বেড়ে যায় ।
আটপৌরে ৭১১ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 711 by Sudip Biswas
আটপৌরে ৭১১
কলাব্রত
সুব্রাহ্মণ। ধনদাস। নিশ্চয়তা।
চিত্রকর
প্রতিভা সাধনযোগ্য জয় খন্ডন।
শব্দব্রাউজ- ১০৮২ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1082, Nilanjan Kumar
শব্দব্রাউজ- ১০৮২ ।। নীলাঞ্জন কুমার
বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা থাকে ২৬.২.২৪. সময় বিকাল ৪ টা ২০ মিনিট।
শব্দসূত্র: যা ভাবো তুমি
ভাবো তুমি
এ পৃথিবী
রাখবে হাতের মুঠোয়?
সব পদানত হবে
আর
করতে তোমার স্তুতি?
ভাবো তুমি
সব মিথ্যে
গায়ের জোরে
সত্যি বানাবে?
যা ভাবো
তাকে পাগলামো বলে।
আটপৌরে ৭১০ || সুদীপ বিশ্বাস-এর কবিতা, Atpoure 710 by Sudip Biswas
আটপৌরে ৭১০
যতোবার
দহনের। সুখেদুখে। নিজেরই।
সৎকার
ফিরে চলি পথের সন্ধানেই।
শব্দব্রাউজ- ১০৮১ ।। নীলাঞ্জন কুমার || Shabdo browse-1081, Nilanjan Kumar
শব্দব্রাউজ- ১০৮১ ।। নীলাঞ্জন কুমার
বিপাশা আবাসন তেঘরিয়া মেন রোড কলকাতা ৭০০১৫৭
থেকে ১৯.২.২০২৪ দুপুর বারোটায়।
শব্দসূত্র: মায়ের ভাষা শুধুই হাসা
মায়ের ভাষায় সেরা খুশি
পান্না চুনি রাশি রাশি
টাটকা তাজা বেশি বেশি ।
ক খ গ ঘ আমার প্রিয়
ঐক্য বাক্য শব্দ দিয়ো
আমার হাসি তোমরা নিও ।
মায়ের ভাষা শুধুই হাসা
একুশ ভরা খুশির নেশা
মনের ভেতর মাতৃভাষা।
👇 👉 Click here for registration...